বগুড়ার ফারজানা যেভাবে পূরণ করলেন বিসিএস ক্যাডারের স্বপ্ন

মাসুম হোসেন: একদিকে সংসার সামলানো, অন্যদিকে স্বপ্নের পথে চলা। এমন এক অবস্থানে থেকে নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন ফারজানা সুলতানা। শুধুমাত্র স্বামীর ভালোবাসা ও উৎসাহে আজ তিনি বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এমনকি কোনো ধরণের কোচিং করা ছাড়াই তিনি এ সাফল্য অর্জন করেন।
তবে একজন তার শিক্ষক হয়ে তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা করেছেন। তিনিই হলেন তার স্বামী। স্বামীর ভালোবাসাতেই আজ স্বপ্নচূড়ায় পৌঁছাতে পেরেছেন ফারজানা।
ফারজানা সুলতানা বগুড়ার সদরের ঠনঠনিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম হযরত আলী।
২০১৬ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। তার স্বামীর নাম রকিব হাসান। রকিব খুলনার বাসিন্দা। ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন রকিব।
ফারজানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এর আগেও তিনি ৩৮ ও ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে প্রিলিমিনারিতেই করেন ফেল। এরপরেও হতাশ হননি। স্বামীর অনুপ্রেরণায় সম্প্রতি ঘোষিত ফলাফলে ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।
ফারজানা বগুড়ার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভিএম) শিক্ষার্থী। ২০০৮ সালে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০১০ সালের এইচএসসি পরীক্ষাতেও রাখেন মেধার স্বাক্ষর। বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে এইচএসসিতেও পেয়েছেন জিপিএ ৫ পয়েন্ট। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে স্নাতক (লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং) সম্পন্ন করেন। এরপরই বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। মাস্টার্স ডিগ্রিও অর্জন করেন একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
ফারজানা বলেন, বছর ছয়েক হলো আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পরবর্তী পুরোটা সময়জুড়ে স্বামীর সমর্থন পেয়েছি। আর তার (স্বামী) প্রবল আগ্রহ এবং ইচ্ছা আমার চলার পথকে আরও গতিময় করে তোলে।
তিনি আরও বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় জন্য কোনো ধরণের কোচিং করিনি। আমার স্বামী সবসময় আমার পাশে থেকেছে। সে-ই আমার একমাত্র শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের মানুষের জন্য কিছুর করবো। আমার সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।
কথা হয় ফারজানার স্বামী রকিব হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফারজানা কঠোর পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছে। মেয়েরা বিয়ের পরেও স্বপ্ন পূরণ করতে পারে- এর উদাহরণ আমার স্ত্রী। ইচ্ছা শক্তি যে কাউকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিবে।