বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ একটা সুযোগ হাতছাড়া করেছে ভারত। লিগ আর সেমিফাইনালে অপরাজিত থাকা ভারত ফাইনালে হেরে গেল অস্ট্রেলিয়ার কাছে। এই হার মেনে নেওয়া কঠিন। হারের পর মাঠ ছাড়ার সময় কেঁদে ফেলতে দেখা যায় মোহাম্মদ সিরাজকে।
বিরাট কোহলি যেন ক্যাপ আর হাত দিয়ে মুখ নয়, ঢেকে রাখতে চাইলেন পুরো পৃথিবীটাকে। চোখে মুখে যে শোক নেমে এসেছিল রোহিত শর্মার। কেএল রাহুল যেন হাটার শক্তিই পাচ্ছিলেন না মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুম পর্যন্ত যাওয়ার।
মাঠে কোনোভাবে নিজেদের আটকে রাখলেও ড্রেসিংরুমে ফিরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রোহিত-বিরাটরা। ম্যাচ শেষে হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় জানান তার শীষ্যদের পরিস্থিতির কথা। লম্বা সময় ধরে কঠিন পরিশ্রমের ফল পেতে উন্মুখ হয়ে থাকা ভারতের যে তীরে এসে তরী ডুববে কে জানত।
কত আয়োজন, কত উৎসব। সব যেন দুলোয় মিশিয়ে গেল এক মুহূর্তে। যাদের জন্য এত আয়োজন, তারাই মলিন মুখে ছেড়ে গেলেন মাঠ। ছাত্রদের এমন মুহূর্ত দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না দ্রাবিড়।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অধিনায়ক রোহিত শর্মার। তিনি না এসে পাঠিয়েছিলেন হেড কোচ দ্রাবিড়কে। তিনি জানান ড্রেসিংরুমে কেমন ছিলেন রোহিত, ‘সে খুবই হতাশ। ড্রেসিংরুমের বাকি সবার মতোই হতাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে আসার আগে ড্রেসিংরুমে কী দেখে এসেছেন জানাতে গিয়ে দ্রাবিড় বলেছেন, ‘ড্রেসিংরুমে বেশ আবেগপ্রবণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোচ হিসেবে ছেলেদের এভাবে দেখাটা আমার জন্য কঠিন। কারণ, এই ছেলেগুলো কী পরিশ্রম করেছে, কী ত্যাগ করেছে, সেটা আমি জানি।’
২০০৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই হেরেছিল ভারত। সেই দলের একজন ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। ইতিহাস যেন আবারও পুনরাবৃত্তি হলো তার কাছে। এমন কী ২০০৭ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নেওয়া দলটার অধিনায়ক ছিলেন দ্রাবিড়। তাই তো এই সময়ে কতটা কষ্ট, সেই অনুভূতি তার থেকে কারোরই বেশি জানবার কথা নয়।
তাই তো সব কিছু মেনে নেওয়ার চেষ্টা করলেন রাহুল দ্রাবিড়। তিনি বলেন, ‘এটাই খেলা। এভাবেই ঘটে। ঘটতে পারে। নির্দিষ্ট দিনে সেরা দলটাই জেতে। আমি জানি, কাল সকালে আবার সূর্য উঠবে। আমরা এটা থেকে শিক্ষা নেব। সেটা কাজে লাগাব। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। থামা যাবে না।’