বগুড়ায় মিটার চুরির পর ‘চিরকুট’ রেখে চাঁদা আদায়, মূল হোতা গ্রেফতার
মিটার চুরির পর চিরকুট রেখে চাঁদা আদায়কারী চক্রের মূল হোতা আব্বাস আলী শেখ (২৫) অবশেষে ধরা পড়েছেন। আব্বাস আলী শেখ বগুড়ার কাহালু উপজেলার জামগ্রামের মৃত আজিম উদ্দিন শেখের ছেলে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাতে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশ তাকে কাহালু উপজেলার জামগ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত সিমসহ দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) নন্দীগ্রাম থানা পুলিশ এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, তিনি বগুড়া সদর, কাহালু, নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর ও পার্শ্ববর্তী নাটোরের বিভিন্ন উপজেলায় বৈদ্যুতিক মিটার চুরিতে ছয় সদস্যের একটি দল গড়ে তোলেন। আব্বাসের নেতৃত্বে ওই সব এলাকায় জমিতে সেচ দেওয়ার কাছে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করা হয়।
মিটার খোলার পর সেখানে একটি ‘চিরকুট’ রাখা হয়। এতে লেখা থাকে, ‘আপনার মিটার চুরি করা হয়েছে। এই মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে টাকা দিন। অন্যথায় মিটার ভেঙে ফেলা হবে। যতবার মিটার লাগাবেন ততবার চুরি করা হবে। কেউ বাধা দিলে প্রয়োজনে তাকে হত্যা করা হবে।’ মিটার মালিকরা বাধ্য হয়ে ওই চক্রের দেওয়া নম্বরে বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকেন। এরপর চুরি করা মিটার কোথায় রাখা আছে তা বলে দেওয়া হয়ে থাকে।
সম্প্রতি নন্দীগ্রামের ভাটগ্রাম ইউনিয়নের চামটা মৌজার পুনাইল পূর্ব মাঠে ঘরসংলগ্ন খুঁটির সঙ্গে থাকা ইউপি সদস্য ইব্রাহিম আলী মন্ডল ও ইউসুফ আলী কাজীর গভীর নলকূপের মিটার চুরি হয়। চোর চক্রের সদস্যরা নলকূপের দরজার মোবাইল ফোন নম্বরসহ চিরকুট রেখে যায়। পরে ওই নম্বরে যোগাযোগ করে নগদের মাধ্যমে সাত হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর ওই নম্বর থেকে জানানো হয়, মিটার দুটি পাশের সরিষা ক্ষেতে লুকানো আছে। ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করেন।
পুলিশ জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মিটার চুরি চক্রের মূল হোতা আব্বাস আলী শেখের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছে মিটার চুরির পর চাঁদাবাজিতে ব্যবহৃত সিমসহ দুটি মোবাইল ফোন এবং চুরি করা মিটারের নম্বর জব্দ করা হয়েছে। পরে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি তার অপর পাঁচ সদস্যের নাম ঠিকানা প্রকাশ করেন। আদালতের নির্দেশে তাকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।