বগুড়ায় রোগী রেখে পালালেন ক্লিনিকের লোকজন
![](https://boguralive.com/wp-content/uploads/2024/01/InShot_20240121_204833465_copy_700x400.jpg)
বগুড়া শহরে একটি ব্লাড ব্যাংক ও দুইটি বেসরকারি ক্লিনিকে মোট সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও সিলগালা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রোববার বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগীতায় যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় অভিযান শেষে একটি ক্লিনিক থেকে দুই রোগীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নিবন্ধনের মেয়াদ ফুরিয়েছে অন্তত চারবছর আগে। ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্রও নেই। কিন্তু চিকিৎসা সেবার সব কার্যক্রম চলছিল দিব্বি। এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েই জরিমানা ও সিলগালা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আভিযানিক দলটি জানায়, শহরের কানছগাড়ী এলাকার শতদল কমিউনিটি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে এক লাখ এবং মা ফাতেমা ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিককে দুই লাখ টাকা এবং শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার সেবা ব্লাড ব্যাংককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী। পরে প্রতিষ্ঠান তিনটি সিলগালা করে দেন তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার সাজ্জাদ উল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, প্রথমে ঠনঠনিয়া এলাকার সেবা ব্লাড ব্যাংকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সেখানে দেখা যায় ২০২০ সালের পর তাদের কোনো কাগজ নবায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া তারা কোনো রকম মেয়াদের তারিখ ছাড়া রক্ত সংরক্ষণ করেন। এমন দশ ব্যাগ রক্ত সেখানে ছিল। এ জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার আব্দুল হামিদ এই টাকা পরিশোধ করেন।
পরবর্তীতে কানছগাড়ী মা ফাতেমা ডায়াগননস্টিক ও ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তার ও নার্স আগেই পালিয়ে গেছেন। পরে সেখানে খোঁজ নিয়ে দুজন রোগী পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ক্লিনিকের মালিক আমিনুলের স্ত্রী বুবলী খাতুন হাজির হয়ে কাগজপত্র দেখান। এখানেও বৈধ কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেননি। অিপারেশন থিয়েটারের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর পাওয়া গেছে। এ প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর দুই রোগীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে রেফার্ড করি আমরা।
শতদল ক্লিনিকেও একই অবস্থা পাওয়া গেছে। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক আলমগীর হোসেনকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক।
মেডিকেল অফিসার সাজ্জাদ উল হক বলেন, বগুড়ায় প্রায় ৫০০ বেসরকারি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠান আছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সবগুলো পরিদর্শন করে অসংগতি খতিয়ে দেখব।
মা ফাতেমা ক্লিনিকে চারদিন আগে স্ত্রী বেবি বেগমকে ভর্তি করিয়েছিলেন আদমদীঘি উপজেলার সান্দিরা গ্রামের আব্বাস আলী। তিনি বলেন, আমরা তো ভালো শুনে এখানে এসেছিলাম। আমার স্ত্রীর অপারেশনও ভালো করেছেন ডাক্তার। কিন্তু হাসপাতালের অনুমোদন নাই এটা আমরা কিভাবে জানবো। আজকে হঠাৎ করে আমাদের দরজা লাগিয়ে সব চলে গেছে। এমন সময়ে রোগীর যদি কিছু হতো তাহলে দায়ভার কে নিতো?