রমজানে গ্যাস্ট্রিক থেকে বাঁচবেন যেভাবে
এখন ছোট বড় প্রায় সবার মাঝেই রয়েছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। যা কিছু খাওয়া হচ্ছে তাতেই যেন গ্যাস্ট্রিকের হামলা পিছু ছাড়ছে না। মুঠো মুঠো ওষুধ খেয়েও মুক্তি নেই নাছোড়বান্দা গ্যাস্ট্রিক থেকে। রমজানে অত্যধিক ভাজা-পোড়া খেলে বেড়ে যায় এই সমস্যা। তবে এর থেকে মুক্তির উপায়ও রয়েছে।
খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম না করা, পানি কম খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে। তাই রমজানে খাবারের সচেতনতা জরুরী।
ইফতারে খেতে হবে-
১. ইফতারের শুরুতে খেজুর খেয়ে নেবেন। খেজুরের মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। ৪টি মাঝারি সাইজের (৩৫ গ্রাম) খেজুরের মধ্যে প্রায় ১০০ ক্যালোরি থাকে। আর খেজুর খেলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্ত থাকা যায়।
২. ইফতারে ফল খাবেন বেশি বেশি। তাহলে পানিশূন্যতা রোধে সহায়তা করবে। যেমন- কলা, তরমুজ, আপেল, কমলা এসব পানিশূন্যতা রোধে উপকারী।
৩. ছোলা ও বুট খেলে তা মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে নেবেন। তাহলে তেল মশলা সরাসরি শরীরে ঢুকবে না। তবে ছোলা-বুট অল্প পরিমাণে খাবেন। ২০-২৫ গ্রাম এর চেয়ে বেশি না। কারণ এটা পরিপাক হতে দীর্ঘ সময় লাগে। বেশি তেল বা মসলা দিয়ে ভাজা ছোলা না খাওয়ায় ভালো।
৪. একটি ডিম খেতে পারেন, একটি ডিম থেকে পাওয়া যায় ৮০ ক্যালোরি। এটি খেলে পেটও ভরবে। আবার শক্তিও পাওয়া যাবে।
৫. ডাবের পানি, ইসুবগুলের ভুসি, লেবুর শরবত ইত্যাদি পান করুন। এগুলোও রোধ করবে পানিশূন্যতা।
ইফতারে এড়িয়ে চলবেন যেসব খাবার-
১. ডুবো তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। ইফতারে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি পরিহার করুন। এই খাবারগুলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করে।
২. ফল ভেবে বেশি টকজাতীয় ফল খাবেন না। কারণ টকজাতীয় ফলে সাইট্রিক অ্যাসিডও থাকে। তাই রোজার সময় টক ফল বেশি খেলেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
৩. টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড থাকে, যা ইফতারে খেলে পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়া তৈরি করে। তাই টমেটো বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো।
৪. পরিহার করতে হবে ঝাল খাবার। কারণ এই খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই কাঁচা মরিচ কিংবা অতিরিক্ত ঝাল খাবার পরিহার করে চলতে হবে।
সেহরিতেও সতর্কতা-
সেহরিতে কখনো পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, খাসি কিংবা গরুর মাংস খাবেন না। আবার ভাজাপোড়াও পরিহার করতে হবে। এসব খাবার হজমে অনেক পানির প্রয়োজন হয়। যেহেতু সারাদিন রোজা রাখার কারণে পানি খাওয়া হয় না, তাই এসব খাবার খেলে শরীর পানিশূন্যও হয়ে পড়তে পারে। তাই সেহরিতে নরম ভাত কিংবা স্যুপ খেলে সবচেয়ে ভালো হয়। এর সঙ্গে ৪-৫ রকমের শাক-সবজি অবশ্যই রাখবেন।