প্রধান খবরবগুড়া সদর উপজেলা

বগুড়ায় বন্ধুর বাড়িতে ছুরিকাঘাতে নিহত হত্যা মামলার আসামি

বগুড়ার সদরে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে ছুরিকাঘাতে আলী হাসান (৩০) নামে এক যুবকের নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে এই যুবক মারা যান।

এর আগে দুপুরে সদরের ফাঁপোড় ইউনিয়নের শহরদীঘি এলাকায় সবুজ সওদাগর নামে যুবকের বাড়িতে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।

আলী হাসান বগুড়া শহরের মালগ্রান পশ্চিমপাড়া এলাকার জিন্নাহর ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছেন, সবুজ ও হাসান দুজনে বন্ধু এবং হত্যা মামলার আসামি। ছুরিকাঘাতের পর হাসানকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় সবুজ। সেখানে ভর্তি করিয়ে পালিয়ে যান সবুজ।

সম্প্রতি ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন হাসান। আর শহরদীঘির বাসিন্দা অভিযুক্ত সবুজ সওদাগর বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের জেলা সভাপতি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায, ২০২১ সালে ফাঁপোর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মমিনুল ইসলাম রকি হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার আসামী আলী হাসান। এ ছাড়া আলী হাসানের বিরুদ্ধে ওই আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলাসহ মাদকের তিনটি ও মারামারির আরও দুইটি মামলা আছে।

সবুজ সওদাগর সৈনিক লীগ নেতা রেহান হত্যা মামলারও আসামি। তার বিরুদ্ধে মাকদসহ আরও একাধিক মামলা আছে। সবুজের সঙ্গে মাদকের জের নিয়ে বাকবিতণ্ডায় নিহত হন হাসান।

স্থানীয়দের বরাতে ফাঁপোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান জানান, সবুজের বাড়িতে আলী হাসান নিয়মিত যাওয়া আসা করতেন। আজও তিনি একটি পালসার মোটরসাইলেকে করে সবুজের বাড়িতে আসেন। দুপুর দুইটা থেকে তিনটার দিকে নিজ বাড়িতে সবুজ তার বন্ধু আলী হাসানের সাথে মাদকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বাকবিতণ্ডতায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর তাকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে সবুজ তার স্ত্রী ও শ্যালিকার সহযোগিতায় আলী হাসানকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে সুযোগ বুঝে তারা সটকে পড়েন। বিকেল ৫ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী হাসানের মৃত্যু হয়।

মেহেদী হাসান বলেন, সবুজ সওদাগর নিজ বাড়িতে মাদকের ব্যবসা চালান। এ নিয়ে বিগত সময়ে প্রশাসনকে অবহিতও করা হয়েছিল।

নিহতের পরিবার জানায়, প্রায় ৮ থেকে ৯ মাস আগে একটি হত্যা মামলা থেকে জামিনে মুক্ত হন আলী হাসান। সবুজ সওদাগর আজ বেলা ১২ টার দিকে হাসানকে শহরদীঘি তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর বিকেলে মৃত্যুর খবর পান পরিবারের সদস্যরা।

আলী হাসানের বাবা জিন্নাহ প্রামানিক বলেন, আমরা জানি আমার ছেলে সবুজের সাথে ট্রাকে চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে। এজন্য তার সাথে সব সময় উঠা বসা করতো। পুলিশ বাড়িতে ছেলের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। কি থেকে কি হয়েছে জানিনা। ছেলের হত্যার বিচার চাই।

বগুড়া ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিসুর রহমান বলেন, দুপুরে কয়েকজন যুবক আলী হাসানকে আহত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। হাসপাতালে ভর্তির পর অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর ওই আলী হাসান মারা যায়। এসময় তার সাথে আসা ওই যুবকেরা হাসানের মরদেহ রেখে পালিয়ে গেলে পুলিশের সন্দেহ হয়। এরপর পরই পুলিশ অনুসন্ধনে নেমে জানতে পারে শহরতলীর শহরদীঘি গ্রামে এক বাড়িতে আলী হাসানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সবুজের বাড়িতে আলী হাসান নিয়মিত যাওয়া আসা করতেন ও তারা ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও আছে। তবে হত্যার কারণ তদন্তে জানা যাবে। জড়িত সবুজ ও তার পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযান চলছে। নিহত আলী হাসানের বুকের ডান পাশে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এতে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button