প্রধান খবরবগুড়া জেলা

লোডশেডিং-গরমে বগুড়ায় এক বিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

বিদ্যুৎ না থাকায় ভ্যাপসা গরম সইতে না পেরে বগুড়ার একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

রোববার বিকেল সোয়া ৩ টার দিকে শহরের কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জিম্মায় দিয়ে দেয়। এ ছাড়া বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যাললের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, রোববার দুপুর ২ টা ৬ মিনিটে প্রতিদিনের মতো মাধ্যমিক শাখার শিক্ষার্থীদের মধ্যাহ্ন বিরতি দেওয়া হয়। বিকেল ৩ টার দিকে তারা বিরতি শেষে শ্রেণি কক্ষে ফেরে। ওই সময় বিদ্যালয় এলাকায় লোডশেডিং চলছিল। এতে অতিরিক্ত গরমে বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার ৩০৪ নম্বর কক্ষে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোজাইফা অসুস্থ হয়ে পড়ে ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

তার শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখে ওই কক্ষের আরও দশজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পাশের ৩০২ নম্বর ও ৩০৩ নম্বর কক্ষের সপ্তম ও নবম শ্রেণির ১১ শিক্ষার্থী (ছাত্রী) অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অসুস্থদের জলেশ্বরীতলার স্কুল হেলথ ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অভিভাবকদের জিম্মায় বাড়িতে পাঠানো হয়।

অসুস্থ হয়ে পড়া সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শরিফা আক্তার জানায়, রোজাইফার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখে ভয় পেয়েছিলাম। আমারও মাথাঘোরা ও হাত-পা কাঁপা শুরু হয়। এখন কিছুটা ভালো লাগছে।

কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আল মামুন সরদার বলেন, রোববার সকাল থেকে এক রকম ভ্যাপসা গরম ছিল। মধ্যাহ্ন বিরতিতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা করে শ্রেণি কক্ষে ফিরলে তখন বিদ্যুৎ ছিল না। রোজাইফার আগে থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। অতিরিক্ত গরমে রোজাইফার সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখন সবাই সুস্থ আছে। আগামীতে শিক্ষার্থীদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেই বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে।

খবর পেয়ে সিভিল সার্জন ডা. শাহানাজ পারভীন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু ঘটনাস্থলে যান ও শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আরাফত হোসেন বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, রোজাইফা নামের শিক্ষার্থী আগে থেকে অসুস্থ ছিল। আজ গরমে খেলাধুলার পর তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বাকি শিক্ষার্থীরা ম্যাচ সাইকোলজিকাল ডিজিসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ঘটনাটি স্বাভাবিক। এখন সবাই সুস্থ আছে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা সবাই এখন সুস্থ আছে। অতিরিক্ত গরমে বিদ্যালয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে শিক্ষার্থীরা যাতে মাঠে খুব বেশি খেলাধুলা করতে না পারে সেই বিষয়টি দেখা হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও অবগত করা হয়েছে।

বগুড়া আবহওয়া অফিস সূত্র জানায়, রোববার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বঙ্গপোসাগরে লঘুচাপের কারণে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এ কারণে দেশের অধিকাংশ স্থানে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button