তরমুজ ফ্রিজে রেখে খান? ডেকে আনছেন বড় বিপদ
গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে জনপ্রিয় তরমুজ। শরীর ঠান্ডা রাখার এ ফলটি থেকে আরও প্রশান্তি পেতে অনেকেই তরমুজ ফ্রিজে রেখে খান। কিন্তু জানেন কি, ফ্রিজে রাখা তরমুজ হঠাৎই ডেকে আনতে পারে বিপদ!
লাল রঙের তরমুজে ৯২ ভাগই পানি, ৬ ভাগ চিনি এবং এতে অন্য উপাদান রয়েছে ২ ভাগ। ভিটামিন ‘এ’-তে ভরা সুস্বাদু এ ফলে রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। যেমন-
১। হার্টের সুস্থতায়: তরমুজ খেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে দূরে রাখা যায়, যা হার্ট সংক্রান্ত রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে। তরমুজে উপস্থিত সিট্রোলিন হার্টের জন্য খুবই ভালো।
২। শরীর আর্দ্র রাখতে: তরমুজে রয়েছে ৯০ শতাংশ পানি, যা শরীরকে বেশ আর্দ্র রাখে।
৩। হজম ক্ষমতা বাড়াতে: তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া এর ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও খাবার হজম করিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
৪। ক্যানসার প্রতিরোধ: তরমুজে থাকা লাইকোপেন ক্যানসারের প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে আনে। এই লাইকোপেনের জন্যই তরমুজের রং গাঢ় লাল হয় এবং এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যানসার রোধ করে।
৫। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: তরমুজ ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, যা অ্যান্টিবডি গঠন করতে সাহায্য করে। এর ফলে শ্বেত রক্তকণিকা সঠিক পরিমাণে তৈরি হয়।
৬। দৃষ্টিশক্তি লোপ প্রতিরোধ: তরমুজে থাকা উপাদান লাইকোপেন চোখের উপকারে আসতে পারে। বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি লোপ একটি সাধারণ সমস্যা, যা থেকে বয়স্করা অন্ধত্বের শিকার হতে পারেন। লাইকোপেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহবিরোধী হিসেবে ভূমিকা রাখায় এটি বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি লোপ হওয়া প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। যদিও এ বিষয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
৭। পেশির ব্যথা উপশম: তরমুজে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড সিট্রুলিন ব্যায়ামের পারফরম্যান্সের উন্নতিতে সহায়ক হতে পারে। এটি একই সঙ্গে পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৮। ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা: তরমুজে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ও ভিটামিন ‘সি’ ত্বক সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভিটামিন ‘সি’ ত্বককে কোমল ও চুল শক্ত রাখতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ভিটামিন ‘এ’ ত্বকে নতুন কোষ গজানোর পাশাপাশি কোষের ক্ষতিপূরণে সহায়তা করে।
তবে তরমুজের এ সব পুষ্টিগুণ আপনি হারাবেন যদি আপনি তরমুজ ফ্রিজে রাখেন। জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে,
ঘরের উষ্ণতাতেই সবচেয়ে ভালো থাকে তরমুজ। এক্ষেত্রে, ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা প্রায় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ মেলে তরমুজ থেকে।
কিন্তু ফ্রিজে রাখার সঙ্গে সঙ্গেই পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে থাকে তরমুজের। পাশাপাশি স্বাভাবিকের চেয়ে ঠান্ডা তরমুজ শরীরে রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দের পরিবর্তন করে।
তাই পয়সা খরচ করে যে তরমুজ কিনেছেন, তার পুরো পুষ্টিগুণ পেতে ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে কখনই ফ্রিজে রেখে তরমুজ খাবেন না। এতে লাভ নয়, বরং শরীরে ক্ষতির কারণই বেশি হয়ে দাঁড়ায়।