বগুড়ায় ছিনতাই আতঙ্কে চলন্ত বাস থেকে লাফ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যু
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বাস ছিনতাই চেষ্টার সময় চলন্ত গাড়ির জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে প্রাণ গেছে সানজিদা স্বর্ণা নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ধনকুন্ডি এলাকায় ফুড ভিলেজ থেকে শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের একটি বাস ছিনতাইয়ের এ চেষ্টা চালান রনি মোল্লা নামে এক যুবক। তাকে আটক করা হয় শাজাহানপুর উপজেলার বনানীর লিচুতলা এলাকা থেকে। বাসটি উদ্ধার করা হয় সেখান থেকে। একই এলাকায় রনির বাড়ি।
নিহত সানজিদা স্বর্ণা বগুড়া উপশহরের স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকার আব্দুর রউফ তালুকদারের মেয়ে। ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিবিএর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
বাসটির চালক ও সহকারী জানিয়েছে, ঢাকার মহাখালী থেকে ৩৩ যাত্রী নিয়ে বগুড়া রওনা হয় তারা। শেরপুর উপজেলার ধনকুন্ডি এলাকার ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টে যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। এ সময় অনেক যাত্রী রেস্টুরেন্টে যায়। বাসে ছিল ওই শিক্ষার্থীসহ চার নারী যাত্রী। কিছুক্ষণ পর এক যুবক গাড়িতে উঠে ট্রায়াল দেওয়ার কথা বলে গাড়ি নিয়ে রওনা দেন।
আটক রনি মোল্লা।
মহাসড়কে ওঠার পর গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালতে থাকলে চার নারী যাত্রী চিৎকার করতে থাকে। তারা তাকে গাড়ির গতি কমাতে বলে। কিন্তু ওই যুবক বেপরোয়া গতিতেই গাড়ি চালাতে থাকেন। শেরপুরের মির্জাপুর এলাকায় পৌঁছলে বাস ছিনতাই আতঙ্কে- গাড়ি থেকে লাফ দেন সানজিদা। স্থানীয়রা তাকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
শাহ ফতেহ আলী পরিবহন কোম্পানির কেয়ারটেকার মো. ইদ্রিস আলী জানান, ফুড ভিলেজে বাস থামার পর চারজন নারী গাড়িতে ছিল। ওই সময় ছেলেটি গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে খোঁজ শুরু করা হয়। এর মধ্যে শাজাহানপুর উপজেলার বনানী লিচুতলা এলাকায় বাসটি আটক করে স্থানীয় ও পুলিশ সদস্যরা। ছেলেটিকেও আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানতে পারছি রনি নামে ওই ছেলে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে বাসে উঠেছিল। তার বাড়িও লিচুতলায়। কিন্তু কেন এমন কাজ করেছে- তা জানা যায়নি।”
সানজিদার বাবা আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, “সকাল ৭টার দিকে বাসে উঠে মেয়ে ফোন দিয়ে কথা বলে। আর কথা হয়নি। পরে পুলিশ ফোন করে জানায় শেরপুরে দুর্ঘটনায় মেয়ে মারা গেছে।”
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, “রনি মোল্লা বাসটি লিচুতলা বাইপাস এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। ওই এলাকাতেই তার বাসা। আমরা বাসটিতে গিয়ে তিনজন নারী যাত্রীকে পাই। তারা আমাদের ঘটনার বিস্তারিত জানান।
“আমরা ওই গাড়ির চালকের আসনের নিচে একটা মানিব্যাগ পাই। মানিব্যাগে এনআইডি ছিল। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে অভিযান চালিয়ে রনিকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ট্রাকচালক রনি বাসের যাত্রীবেশে আব্দুল্লাহপুর থেকে বগুড়ায় আসছিল।”