সেশনজট নিরসনসহ ৯ দফা দাবিতে আ. হক কলেজ শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট নিরসনসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ ‘অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান’ এর নিকট ৯ দফা দাবি পেশ করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় অধ্যক্ষ খোন্দকার কামাল হাসান জানিয়েছেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৯ দফা দাবি পৌছেঁ দিবেন’
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবিতে উল্লেখ রয়েছে, আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট এবং অন্যান্য সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে আমরা ৯ দফা নিম্নে পেশ করছি:
১. সেশনজট কমানোর জন্য একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে অন্তত ১টি সেশনের ফরম ফিলাপ, পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশ করে সেশন সমাপ্ত করতে হবে। প্রয়োজনে পূর্বের ন্যায় ক্রাশ প্রোগামের মাধ্যমে সেশনজট নিরসন করতে হবে।
২. ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও অস্বাভাবিক ফল আসে। এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পুরনো সমস্যা যা বর্তমানে মোটেও কাম্য নয়। এটি সমাধানের জন্য খাতা রিভিউ পদ্ধতি চালু করতে হবে এবং সেই সাথে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের ফি কমাতে হবে।
৩. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজসমূহে নিয়মিত ক্লাস নেয়া হচ্ছে কি-না তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক দ্বারা তদারকি করতে হবে। যাতে ক্লাসে সবাই নিয়মিত উপস্থিত থাকে সেজন্য ৭৫% উপস্থিতি নিয়মটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য একটি সচল নম্বর থাকতে হবে, যাতে একজন শিক্ষার্থী সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। একটি অভিযোগ নম্বর থাকতে হবে, যাতে শিক্ষার্থী কোনো হয়রানির শিকার হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট অভিযোগ জানাতে পারে।
৫. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি-বেসরকারি কলেজসমূহে কারণ না দেখিয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়। শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাচাইপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. নিয়মিত সমাবর্তনের আয়োজন করতে হবে। সমাবর্তন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলে অনেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। তাই বিভাগীয় পর্যায়ে যেনো সমাবর্তনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৭. ইনকোর্স পরীক্ষায় পরিবর্তন আনতে হবে। ইনকোর্স ১০ নম্বর, ক্লাস প্রেজেন্টেশন/অ্যাসাইনমেন্ট ৫ নম্বর, ক্লাসে উপস্থিতির জন্য ৫ নম্বর। এছাড়া প্রতি ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার সাথে ২ ক্রেডিটের মৌখিক পরীক্ষা চালু করতে হবে।
৮. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট সার্ভার অত্যন্ত দুর্বল লোডের। যে-কোনো পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার আগেই সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী ফল দেখতে না পেরে মানসিক পীড়ায় ভুগতে থাকে। সার্ভার লোড আপগ্রেড করতে হবে অথবা কোর্সভিত্তিক আলাদা ফল প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বাতিল, মূল সনদের জন্য আবেদন, ডকুমেন্টস সংশোধনসহ সকল সার্ভিস একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রয়োজনে সার্ভিস সংক্রান্ত হেল্পলাইন চালু করতে হবে। অনেক সময় আবেদনে ত্রুটির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাসে আসতে হয় যা শিক্ষার্থীর জন্য হয়রানি।
এখন পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদালয়ের অন্তর্গত প্রায় ২০ টি কলেজ নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহোদয়দের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।