প্রধান খবরবগুড়া জেলা

আমাকে আওয়ামী লীগ-বিএনপির লোক মারধর করেছে: হিরো আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক: আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম দাবী করেছেন, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে তার উপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির লোকজন।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

হিরো আলম বলেন, গতকাল আদালতে আমি গিয়েছিলাম মামলা করার জন্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার উপর যে হামলা করা হয় এবং বগুড়ায় উপ-নির্বাচনে নির্বাচনী ফলাফল ছিনিয়ে নেয়ায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে ৮/১০ জন ছেলেপুলে আমার উপর হামলা করে। তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এর আগে তারা শুধু বলে ‘এই তুই তারেক রহমানকে গালিগালাজ করছিস কেন, তোর এত সাহস কুটি থেকে আসলো’- এই একটা কথা বলেই তারা মারধর শুরু করে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এই দুই দলের লোকজনই তাকে মেরেছে। কারণ হলো দুইটা। আওয়ামী লীগের লোকজন মেরেছে কারণ আমি তাদের লোকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আর রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করায় তারা মেরেছে। আমাকে মারার এই দুইটাই ছিলো মূল কারণ।

হিরো আলম বলেন, আমাকে মারধরের ঘটনায় যারা বলেছেন হিরো আলম ইউটিউবার। ইউটিউবের ভিউ নিয়ে আসার জন্য একটা নাটক করেছে। বিএনপির যারা আমাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আমি তাদেরকে ধিক্কার জানাই। তিনি বলেন, রাজনীতি মানে লাশের খেলা। তাই বলে এই লাশের খেলা না যে আপনারা কালকের যে মারের ঘটনা দেখেছেন এটিকে ইউটিউবের বিজনেস মনে করেছেন। যারা গতকাল আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে বলেন, আপনাদের একটা কথা বলতে চাই, গতকাল যখন আমার উপর হামলার ঘটনায় আমি কেন বিএনপির কথা বলেছি তার কারণ আমাকে মারধরের আগে বলা হয়েছিলো, তুই বিএনপির বিরুদ্ধে কেন কথা বলিস এবং রেজভীর বিরুদ্ধে কেন মামলা করেছিস।

হিরো আলম বলেন, কালকে গন্ডগোল হওয়ার পর অনেকেই বলেছেন সেখানে বিএনপির কোনো লোকজন ছিল না। আমি ফুটেজ দেখেছি। সেখানে কয়েকজনের পরিচয় আমরা জানতে পেরেছি। এর মধ্যে রনি, নাজমুল নামে দুই জনের পরিচয় পেয়েছি। এই দুইজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো। এখন তারা বহিষ্কৃত। এছাড়া নুরুন্নবী নামের একজন কালো করে যে ছেলেটা আমাকে মারধর করেছে সে আওয়ামী লীগের ফুটেজে ছবি দেখে এগুলো আমরা বের করেছি।

তিনি বগুড়ার বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে মারধরের পর যখন বললাম বিএনপির লোকজন আমাকে মারধর করেছে। মারধরের ফুটেজ তো সবার কাছেই ছিলো। পরে তারা কোর্টে গিয়ে ওই ছেলেদের ধরে নিয়ে এসে মিডিয়ার সামনে কেন বললো এরা বিএনপির কেউ না? এটা প্রমাণ করলো না কেন? আমার নামে আপনারা গুজব কেন ছড়াচ্ছেন? আপনারা বলছেন হিরো আলম ভাইরাল হওয়ার জন্য এটা করছে।

এ সময় তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, আমি হিরো আলম কি এই রাজনীতি করে ভাইরাল? আমি হিরো আলম নাটক, গান, সিনেমা করে ভাইরাল হয়েছি। রাজনীতিতে এসেছি পরে।

বগুড়ায় আমি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেছি। আমি গতকাল বিএনপির কারো নামে মামলা করিনি। আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের লোকজন আমার উপর যে অত্যাচার জুলুম করেছে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। গতকাল যারা আমাকে মারধর করেছে ছাত্র আন্দোলনে তাদের কোন ফুটেজ দেখাতে পারবেন? আমরা ছাত্র আন্দোলনের সামনে ছিলাম। এটা যাচাই করতে আপনারা মিডিয়ার ফুটেজ দেখতে পারেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা আমার উপর হামলা করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। আমাকে মারধরের ফুটেজ তো সারা বাংলাদেশ দেখেছে। হামলা কারীদের যদি ধরা হয় তখনই বেরিয়ে আসবে তারা কারা! বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ভাইসহ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো আমি শুনেছি। তাদেরকে একটা কথা বলতে চাই, ভাই আপনাদের আমি শ্রদ্ধা করি, বিএনপিকে ভালোবাসি। গতকাল আমার মামলাটা ছিলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। কিন্তু আপনাদের লোকজন যে বলছে, আমি তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছি, এই ফুটেজটা আপনারা বের করবেন। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি আমার যদি ভুল হয়ে থাকে আমি ক্ষমা চাইবো।

হিরো আলম আরো বলেন, আমার উপর আওয়ামী লীগও ক্ষ্যাপা এবং বিএনপিও ক্ষ্যাপা। কারণ আমি তাদেরকে ছাড় দিয়ে কথা বলিনি। এটা আমার অপরাধ।

এ সময় তিনি বলেন, আমি রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে কেন মামলা করেছিলাম কারণ আমাকে ডিবি হারুন একটা ট্র্যাপে ফেলেছিলো। তিনি আমাকে মামলাটি করতে বাধ্য করেছিলেন। এই জায়গায় আপনাদের বুঝতে হবে, যে হিরো আলম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন দলটিকে ছাড় দিয়ে কথা বলিনি। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। তাহলে হিরো আলম কেন বিএনপির বিরুদ্ধে? ডিবি হারুন এবং তাদের মন্তব্য ছিলো সেই সময় বিএনপির যারা সিনিয়র নেতা আছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দেশে একটা অরাজকতা লাগানোর জন্য। দেশে সব সময় অরাজকতা লাগিয়ে রাখার জন্য আমাদের মতো লোকদের দিয়ে মামলা দিয়ে রাখার জন্য। তারা এভাবে আমাকে দিয়ে ট্র্যাপে ফেলে ব্যবহার করেছে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় যেমন বিএনপির লোক আওয়াম লীগ হয়ে গিয়েছিলো। তেমনি আজকে অনেকেই যারা আওয়ামী লীগের লোক ছিলো তারা বিএনপি হয়ে গেছে।

হিরো আলম প্রজন্ম লীগে যোগদান করেছিলেন এবং শেখ মুজিবের কবর জিয়ারত করেছিলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি পাল্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নে করেন, প্রজন্ম লীগের তিনি যোগদান করেছিলেন এমন কোন কাগজপত্র কেউ দেখাতে পারবেন কিনা? আমি যদি প্রজন্ম লীগে যোগদানই করতাম তাহলে এর আগে যে নির্বাচন হলো সেখানে তো আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতাম। আমি তো কংগ্রেস থেকে ডাব মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button