প্রধান খবরবগুড়া সদর উপজেলা

বগুড়ায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ”মারধর ও ধর্ষণ”

নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ার সদরের মানিকচকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারপিটের পর অন্তঃস্বত্তা এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টা এবং তার গৃহকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাতে এই ঘটনায় সদর থানায় মামলা করেন অন্তঃস্বত্তা ওই নারী। এর আগে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মানিকচক এলাকার একটি লিচু বাগানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই গৃহকর্ত্রী ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, মো. আশিকুল ইসলাম (৩২), মেহেদী হাসান শাওন (৩৫), হামেদ আলী (২৬), সেলিম হোসেন (২২), মহিন (২২), মো. শাওন (২৪), রকি (২৩)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ী কর্নপুর পশ্চিমপাড়া। অন্য দুইজন মধ্যে মিনাজুল ইসলাম (২২) বাড়ি তিলেরপাড়া এবং কর্নপুর দক্ষিণপাড়ার সেলিম মিয়া(২৮)।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই গৃহকর্ত্রী গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার স্বামী ও গৃহকর্মীকে নিয়ে বগুড়া সদরে কর্নপুর এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। পরে রাতের খাবার খেয়ে তারা রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে পায়ে হেটে মানিকচক বাজারের দিকে রওনা দেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে তারা মানিকচক হাইস্কুলের দক্ষিণপাশে আরিফের ফ্লেক্সিলোডের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার ওপর পৌছামাত্র আসামীরা তাদের পেছনে দাড়ায়। এর মধ্যে ৯ নং আসামী সেলিম মিয়া তার পড়নের বোরকা ধরে টানা হেচড়া করে। এ সময় তার স্বামী এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা ধারালো চাকু বের করে আমাদের আক্রমণ করে। এ সময় তার স্বামী জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন আসামীরা তাকে ও তার কাজের মেয়েকে চাকু দিয়ে মারপিটের ভয় দেখিয়ে ওই এলাকার এলপিজি পাম্পের পশ্চিম পার্শ্বে লিচু বাগানের ভিতরে যায়। এ সময় আসামীরা তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করে। তিনি চিৎকার করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারা হয়। এ সময় অন্য আসামীরা চলে গেলেও ১ নং আসামী আশিকুল ওই গৃহকর্ত্রী ও তার কাজের মেয়েকে লিচু বাগান থেকে মানিকচক বাজারে পৌঁছে দেওয়া কথা বলে কিছুক্ষণ ঘটনাস্থলে থাকতে বলে। পরে আশিকুল চাকুর মুখে ভয় দেখিয়ে তার কাজের মেয়েকে ধর্ষণ করে।

শুক্রবার গভীর রাতে ওই নারীর স্বামী সাহায্যের জন্য জাতীয় পরিষেবা ৯৯৯ এ ফোন দেন। তার ফোন পেয়ে সদর থানা থেকে পুলিশের একটি দল এসে ওই নারী ও গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে। পরের দিন শনিবার বিকেলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান চিকিৎসার জন্য।

অন্তঃস্বত্তা ওই নারী জানান, শনিবার আমাদের কাজের মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য এসেছি। আমি নিজেও সাড়ে চার মাসের অন্তঃস্বত্তা। আমাকে অনেক মারধর করেছে ওরা। শনিবার রাতেই থানায় মামলা করা হয়। আজকে আমাদের গৃহকর্মীর নিয়ে মেডিকেল পরীক্ষা ও আদালতে গিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমরা পরিষেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গৃহকর্ত্রী আর গৃহকর্মীকে উদ্ধার করি। সে সময় তারা আমাদের জানান ওই এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি তাদেরকে রাস্তায় হামলা চালিয়ে মারধর করেছে।

সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button