বগুড়ায় ট্রাফিক বক্স জনকল্যাণে ছাত্র সমাজের ব্যানারে ‘দখল’
মাসুম হোসেন: কেউ বিছানা পেতে শুয়ে আছেন, অন্যরা গল্পে মজেছেন। এক দল চলে গেলে, আসে আরেক দল। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের কার্যালয়ে খাতা-কলম নিয়ে চেয়ারে বসে ডিউটিও ভাগ করছেন তারা। স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আর সেই ঘরের বাহিরেই ঘোরাফেরা করছেন পুলিশ সদস্যরা। সেইসাথে বিভিন্ন দোকানে বসে সময় কাটাচ্ছেন তারা।
সম্প্রতি বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে গিয়ে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।
এসময় আরেক ঘটনা চোখে পড়ে। সাতমাথা এলাকায় ছয়জন ট্রাফিক পুলিশ এক সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের সঙ্গে থাকা এক শিক্ষার্থী সেখানে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন। আর নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশ সদস্যরা। এছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতেও পুলিশের সঙ্গে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন কিছু শিক্ষার্থী।
সাতমাথায় ট্রাফিক পুলিশের ওই বক্সে দেখা যায়, সেখানে জনকল্যাণ ছাত্র সমাজের একটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সেই ব্যানারের নিচে লেখা আছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
ট্রাফিক বক্সে থাকা বাঁধন হোসেন নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
বাঁধন জানান, গত ৬ আগস্ট থেকে ট্রাফিকবক্সে বসছেন তারা। এখান থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ট্রাফিকের দাঁয়িত্ব পালন করাসহ তাদের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে। বাজার মনিটরিং ও মেডিকেল ক্যাম্পিং। এর আগে বন্যার্তদের সহায়তায় এখান থেকেই তারা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
মেডিকেল ক্যাম্পিংয়ে কী ধরণের সেবা দেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে রয়েছেন। সেখানে সেবা নিতে আসা রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা পাচ্ছেন কিনা, সেইসাথে তারা কোনো ধরণের হয়রানির শিকার হচ্ছেন কিনা এসব বিষয় দেখা হয়।
ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাফিক বক্স থেকে তারা কোনো ধরণের কার্যক্রম চালাতে পারছেন না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ভাঙচুরের শিকার হওয়া ট্রাফিক বক্সটি সংস্কারের প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এক পক্ষ ওখানে অবস্থান করছেন। তাদেরকে কিছু বলাও যাচ্ছে না। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
জানতে চাইলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ট্রাফিক বক্স সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেখানে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। খুব শিগগিরই ওই বক্সের একটা রুমে আমাদের কার্যক্রম শুরু করা হবে। আর আরেক রুমে শিক্ষার্থীরা থেকে সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চান।
এদিকে, বগুড়ার শহরে দিন দিন যানজট বেড়েই চলেছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ছোট-বড় যান চালকেরাসহ যাত্রীরা। যানজটের কারণে সময় মত গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে অনেকেই হচ্ছেন অসন্তোষ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, বিশেষ করে মোটা চাকার অটোরিকশাগুলো শহরে অবাধে চলাচল করছে। এ কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।