এশিয়ার বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লো
এশিয়ার বাজারে ফের জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। তখন অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ বন্ধের আশঙ্কায় দাম বাড়তে থাকে। কিন্তু ইসরায়েল পাল্টা আক্রমণ না করায় ধীরে ধীরে উত্তেজনা কমতে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের উদ্বেগ এবং বিশ্বের শীর্ষ তেল আমদানিকারক চীনে চাহিদা কমায় বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহে তেলের দাম ছিল নিম্নমুখী। এই সময়ে তেলের দাম ৭ শতাংশ কমে।
কিন্তু সোমবার এশিয়ার বাজারে ফের তেলের দাম বেড়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রুড তেল ২৭ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৩ দশমিক ৩৩ ডলারে পৌঁছেছে। অপরদিকে ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড তেল ৩১ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৬৯ দশমিক ৫৩ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ৭ শতাংশ এবং ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ৮ শতাংশ কম দামে বিক্রি হয়েছে। এবার ডলারের হিসেবে ৫ শতাংশ দাম বাড়ল।
এর আগে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ইরান-ইসরায়েল ও লেবানন ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজেনার প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক তেলের বাজারে। এ উত্তেজনার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ শতাংশ বাড়ে। তখন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই ব্র্যান্ড ব্রেন্ট ক্রুড এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) উভয়ের দাম আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকে। এর মধ্যে শতকরা হিসেবে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম আট শতাংশ বেড়েছিল। আর ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের উল্লেখযোগ্য অংশ আসে ইরান থেকে। তবে ইরান ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যে ইরানের তেলখনিতে হামলার হুমকির ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দামে এ প্রভাব দেখা দিয়েছে।
ব্রিটেনের বাজার বিশ্লেষক সংস্থা স্টোনএক্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের তেল অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু বানায় তাহলে তেলের আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তাৎক্ষণিকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে তিন থেকে পাঁচ ডলার বাড়বে।
ওপেক প্লাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল ইরানের তেল অবকাঠামোতে হামলা করলে স্বাভাবিকভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ইরানের তেল আসা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে সাময়িকভাবে এ ঘাটতি পূরণ করতে পারলেও ওপেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো তা দীর্ঘমেয়াদে পূরণ করতে পারবে না।
আন্তর্জাতিক বাজারে ইরান প্রতিদিন ৩২ লাখ ব্যারেল তেল পাঠায়। তা মোট বাজারের শতকরা হিসেবে প্রায় তিন শতাংশ। শতকরা হিসেবে এ পরিমাণ খুব বেশি না হলেও বর্তমানে বিশ্ববাজার স্থিতিশীল রাখতে ইরানের এ তেলের জোগান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।