তদন্ত কমিটি করবে জেলা প্রশাসন: বগুড়ায় চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়া শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের মফিজ পাগলা মোড় এলাকায় অবস্থিত ডক্টরস ক্লিনিক ইউনিট – ১ এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় রাতে জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
ঘটনার পর নিহতের স্বজনরা ক্লিনিকটিতে অবস্থান নেয়। এ সময় বিষয়টি জানাজানি হলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও ক্লিনিকটিতে আসে।
নিহত রোগীর নাম জাহানারা বেগম (৬৪)। তিনি শহরের ভাটকান্দি এলাকার আব্দুল বারী মন্ডলের স্ত্রী ছিলেন।
রোগীর স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাহানারা বেগম ডায়াবেটিকের রোগী ছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে তাকে ৪ট ২০ মিনিটে ক্লিনিকটিতে নিয়ে আসে স্বজনরা। ওই সময় ক্লিনিকে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনকে ডা. মামুনুর রশিদের কাছে চিকিৎসার কথা বলেন। জাহানারার স্বজনদের জানানো হয় ওই ডাক্তার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকে আসবেন। এভাবে দীর্ঘক্ষণ তাদেরকে সেখানেই দেরি করায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এক পর্যায়ে কোনো চিকিৎসা না পাওয়ায় রোগী প্রায় দুই ঘন্টা পর মারা যান।
নিহতের ছেলে আহসান হাবিব খোরশেদ আলম জানান, মা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু ক্লিনিক থেকে আমাদের আরও কিছুক্ষণ দেরি করতে বলে। ক্লিনিকের লোকজন বলছিল, আরও ২ মিনিট দেরি করুন, ডাক্তার আসবেন এখনই। এভাবে দুই ঘন্টা কেটে যায়। এ সময় ক্লিনিকের নার্সদের মায়ের শোয়ার জন্য বেডের ব্যবস্থা করতে বলেছিলাম। তারা সেটিও করেন না। তাকে চেয়ারেই বসিয়ে রাখা হয়। এক পর্যায়ে বিনা চিকিৎসায় মা মারা যান।
পরে সন্ধ্যা সাত টার দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে রোগীর অন্য স্বজন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা আসেন। এ সময় লোকজন দেখে ক্লিনিকটির নার্স এবং অন্য স্টাফরা পালিয়ে যান। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা এ ঘটনায় শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এসব বিষয়ে জানতে ডক্টরস ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা পালিয়ে যাওয়ায় কারও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
রাতে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নাহিয়ান মুনসীফ বলেন, এখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনের বক্তব্য আমরা নিয়েছি। এসব আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করব। এ বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত করে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেয়া হবে।