ভয়াল তাজরীন ট্রাজেডির এক যুগ, এখনো আক্ষেপ আহতদের
দেশের পোশাক খাতের ভয়াল স্মৃতির নাম তাজরীন ট্রাজেডি। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১১৭ শ্রমিক। আহত হয় দুই শতাধিক। বেঁচে ফেরা অনেকেই আর ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে। এখনও পুনর্বাসিত না হওয়ায় আক্ষেপ আহতদের।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সকালে অন্যদিনের মতো সেদিনও কাজে যোগ দিয়েছিলেন শ্রমিকেরা। সন্ধ্যায় হঠাৎই ভবনের আটতলায় আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। জীবন বাঁচাতে কেউ কেউ লাফিয়ে পড়েন। অনেকেই পুড়ে অঙ্গার।
দিনের আলোর সাথে সেদিন নিভে গিয়েছিল অনেকের জীবন। সন্ধ্যা নামতেই শ্রমিকদের বাঁচার আকুতিতে ভারি হয়ে ওঠে নিশ্চিন্তপুরের আকাশ-বাতাস। সে দৃশ্য মনে পড়লে এখনও আৎকে ওঠেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আরও ৪ জন। কারখানাটিতে এক হাজার ১৬৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন। তবে দুর্ঘটনার সময় ৯৮৪ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন।
মরদেহ শনাক্ত হওয়ায় ৫৮ জনকে পরিবার ও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যদের মরদেহ শনাক্ত না হওয়ায় তাদের জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ঘটনার ১২ বছর অতিবাহিত হলেও নিশ্চিন্তপুরের সেই ভবনটি এখনও দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু একসময়ের কর্মঠ শ্রমিকরা এখন আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। শারীরিক যন্ত্রণা, সংসারের অনটনের পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি না পাওয়ার আক্ষেপে দিন কাটছে তাদের।
দুর্ঘটনার পর বেশ কয়েক বছর ধরেই আহত শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণের আশায় থাকতেন ভবনের আশপাশের এলাকায়। তাদের মধ্যে অনেকে মারা গেছেন, কেউ অর্থাভাবে ফিরে গেছেন গ্রামে।
ঘটনার ১২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনও কারও শাস্তি হলো না। পঙ্গু ও আহতদের পুনর্বাসনসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।
তারা জানান, আমরা সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন চাই। ভিক্ষা চাই না।
একই জায়গায় কারখানাটি ফের চালু করে আহত শ্রমিকদের বাসস্থান বা কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়ার
দাবি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের।