অর্থনৈতিক শুমারীতে বগুড়ায় আ. লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: অর্থনৈতিক শুমারির গননার কাজের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) শাহারিয়ার রহমান। এ নিয়ে উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি হয় বলে জানা যায়।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অর্থনৈতিক শুমারীতে গননার জন্য সারিয়াকান্দিতে ১৯৯ জনের একটি তালিকা করা হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা তালিকাই নতুন করে হালনাগাদ করা হয়। তার মধ্যে সুপার ভাইজার ৩২জন গননাকারী ১৬৭ জন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রশিক্ষণের এই তালিকা অনুমোদন করা হয়। পরের দিন শুক্রবার থেকে অর্থনৈতিক শুমারীর গণনাকারি এবং সুপার ভাইজারদের ৪ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
এতে উপজেলার আওয়ামী দলীয় নেতাকর্মী ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সর্মথকদের অর্থনৈতিক শুমারীতে গণনাকারী ও সুপারভাইজার পদে অর্ন্তভুক্তির করা হয়। কিন্তু এরপরে ও শুক্রবার ১ম দিনের মতো প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু প্রস্তুতি নেয় উপজেলা প্রশাসন।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে উপজেলায় প্রতিবাদ জানায় স্থানীয়রা। কিন্তু ঘটনাটি আমলে নেননি ইউএনও শাহারিয়ার
পরে সেদিনই ইউএনওয়ের অপসারণের দাবিতে বিএনপি ও জামাতের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ ও ঝটিকা মিছিল করেন। তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মুখে পরে পরিসংখ্যান অফিসার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্হগিত ঘোষণা করেন।
আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজের গেট থেকে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও জামায়াত। এতে উপজেলা জামায়াতের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম (স্বপন) ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানাসহ, বিএনপি জামায়াত ও ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
এসময় সারিয়াকান্দি উপজেলা পৌর বিএপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা তার বক্তব্য বলেন, বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দিয়ে অর্থনৈতিক শুমারী সম্পন্ন করা উদ্দেশ্য প্রনোদিত। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী শাহারিয়ার রহমান ৫ আগস্টের পরও আওয়ামী লীগ প্রীতি দেখাচ্ছেন।
এছাড়া সারিয়াকান্দি উপজেলা জামায়াতের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম (স্বপন) তার বক্তব্য বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ হতে উন্নত আয়ের দেশে’ দেখাতে অর্থনৈতিক শুমারীর উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ দলীয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ি গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের তালিকা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.রুবেল মিয়ার যোগসাজশে আওয়ামী লীগের তালিকা অনুসরণ করছেন। বিভিন্নভাবে এই ইউএনও আওয়ামী লীগের লোকদের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা এই ইউএনওয়ের অপসারণ চাই।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের তদন্তকারি কর্মকর্তা ও অর্থনেতিক শুমারি ও উপজেলার অথনৈতিক শুমারি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো.রুবেল মিয়া বলেন, গননাকারি ও সুপারভাইজার নিয়োগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়েছে।
তবে এসব প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার বিএনপি নেতাদের সাথে আলোচনায় বসেন ইউএনও শাহরিয়ার রহমান। এই আলোচনা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল মাহমুদ বলেন, আমরা আলোচনায় বসেছিলাম সকল নেতা কর্মীদের নিয়ে। কিন্তু আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আলোচনার কোনো সমাধান আসেনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.শাহারিয়ার রহমান বলেন, আজকে বিএনপির প্রতিনিধিদের সাথে বসেছিলাম তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছি। তাদেরকে সরকারের প্রজ্ঞাপন বিষয়ে বলেছি। আর আমার বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে।