নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিকার
নিপা ভাইরাস (Nipah Virus) একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ যা পশু এবং মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়। এটি প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায়। প্রধানত বাদুড় থেকে এবং সংক্রমিত প্রাণী বা ব্যক্তির মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়।
লক্ষণ
নিপা ভাইরাস সংক্রমণ প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ফ্লুর মতো মনে হতে পারে। তবে এটি দ্রুত গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। প্রধান লক্ষণগুলো হলো:
- জ্বর এবং মাথাব্যথা: আক্রান্তের শরীরে তীব্র জ্বর এবং মাথাব্যথা দেখা দেয়।
- বমি এবং বমিভাব: হজমে সমস্যা এবং বমি হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
- মানসিক বিভ্রান্তি: রোগীর আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
- মস্তিষ্কে প্রদাহ (এনসেফালাইটিস): এটি মারাত্মক হতে পারে এবং দ্রুত কোমায় পরিণত হতে পারে।
- খিঁচুনি: খিঁচুনি বা অজ্ঞান হয়ে পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কীভাবে ছড়ায়?
বাদুড়ের মাধ্যমে: ফলের রস বা ফল খাওয়া, যা বাদুড়ের লালারস বা প্রস্রাবের সংস্পর্শে এসেছে।
সংক্রমিত পশু: যেমন শূকর, গরু ইত্যাদির সংস্পর্শে।
সংক্রমিত ব্যক্তি: রোগীর লালা, রক্ত, বা অন্যান্য শারীরিক তরলের মাধ্যমে।
প্রতিকার
নিপা ভাইরাসের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা টিকা নেই। তবে দ্রুত চিকিৎসা নিলে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর পন্থা।
প্রতিরোধের উপায়
- ফল এবং রস খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
- বাদুড় বা সন্দেহজনক পশুর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
- স্যানিটেশন বজায় রাখুন: হাত ধোয়া এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করুন।
- রোগীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন: বিশেষ করে তার শারীরিক তরলের সংস্পর্শ এড়াতে হবে।
- মাস্ক এবং গ্লাভস পরিধান করুন: রোগীর যত্ন নেওয়ার সময় এটি প্রয়োজন।
আপনার করণীয়
রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা স্থানীয় স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে চলুন।
নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষায় সচেতন থাকুন।
নিপা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতাই হলো সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে বিপদ এড়ানো সম্ভব।