স্বাস্থ্য

নতুন হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস: লক্ষণ ও প্রতিকার

চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস হল একটি সাধারণ ভাইরাস যা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি শিশু, বৃদ্ধ এবং দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই ভাইরাসটি সাধারণত শীতকাল এবং বসন্তে বেশি সক্রিয় থাকে।

লক্ষণসমূহ:

হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাসের সংক্রমণ হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:

  1. হালকা লক্ষণ (সাধারণ ঠান্ডা বা ফ্লু-এর মতো)

নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া

গলা ব্যথা

কাশি

হালকা জ্বর

ক্লান্তি

  1. গুরুতর লক্ষণ (যদি শ্বাসতন্ত্রে গভীর প্রভাব ফেলে)

শ্বাসকষ্ট

বুকে অস্বস্তি বা ব্যথা

উচ্চ জ্বর

নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কিওলাইটিস (ছোট শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়)

অতি দুর্বলতা

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষণ:

খাবার বা দুধ খেতে অস্বীকৃতি

শ্বাস নিতে অস্বস্তি

অস্বাভাবিক কান্না বা অস্থিরতা

ভাইরাস ছড়ানোর উপায়:

হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে সংক্রমিত হতে পারে:

হাঁচি-কাশির সময় ছড়ানো ড্রপলেটের মাধ্যমে।

দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পরে মুখ, নাক, বা চোখ স্পর্শ করলে।

আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে।

প্রতিকার ও চিকিৎসা:

এই ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। সাধারণত লক্ষণগুলোর উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়। প্রতিকার ব্যবস্থা নিম্নরূপ:

  1. নিজে থেকে যত্ন নেওয়ার উপায়:

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

পর্যাপ্ত পানি এবং তরল গ্রহণ করুন।

হালকা খাবার খান।

কাশি বা গলা ব্যথা কমানোর জন্য উষ্ণ লবণ পানিতে গার্গল করুন।

  1. ওষুধ ব্যবহার:

জ্বর এবং ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল।

নাক বন্ধের জন্য ন্যাসাল ড্রপ বা স্প্রে।

যদি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সেকেন্ডারি সংক্রমণ হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক।

  1. গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসা:

অক্সিজেন সাপোর্ট।

হাসপাতালে ভর্তি করে নিবিড় পর্যবেক্ষণ।

প্রতিরোধ ব্যবস্থা:

নিয়মিত হাত ধোয়া।

চোখ, নাক, এবং মুখ স্পর্শ করা এড়ানো।

ভিড় এড়ানো, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের।

আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়ানো।

হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা কনুই ব্যবহার করা।

চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন:

যদি নিম্নলিখিত অবস্থাগুলি দেখা দেয়:

শ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়।

দীর্ঘস্থায়ী জ্বর।

শিশুদের মধ্যে খাবার খেতে না চাওয়া বা অতিরিক্ত অস্থিরতা।

সতর্কতা ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এই ভাইরাসজনিত সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button