বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেপ্তার বগুড়ার সন্ত্রাসী নুরু, দুপুরে তোলা হবে আদালতে

বগুড়ার শাজাহানপুরের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান (৪০) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে চালান করবে পুলিশ। এর আগে বুধবার ঢাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাজাহানপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা, হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র, মাদক, জমি দখলসহ অন্তত ১৩টি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ তাকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম।
ওসি জানান, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে রাজধানী ঢাকা শহরে আত্মগোপনে ছিলেন নুরুজ্জামান। গ্রেপ্তার এড়াতে নিজের পরিচয় গোপন রেখে ঢাকার সাভারের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। নুরুজ্জামানের অবস্থানের বিষয়টি টের পেয়ে বুধবার দুপুরে তাকে অবরুদ্ধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সংবাদ পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ অবরুদ্ধ নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে নুরুজ্জামানকে বগুড়ায় নিয়ে আসা হয়। তাকে আপাতত দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে নুরুজ্জামানকে নিয়ে যাবে পুলিশ। এ ছাড়া পরবর্তীতে আদালতের শুনানী অনুযায়ী অন্যান্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
গত বছরের ৭ এপ্রিল শাজাহানপুর থানায় ঢুকে অস্ত্র মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই হামলায় ৮ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনার পর নুরুজ্জামান ও তার সহযোগীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫টি গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল, মাদক ও দেশি অস্ত্র জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানসহ ৪৫ জনকে আসামি করে পৃথক আইনে দুটি মামলা হয়।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের মাঝিড়াপাড়ার দিনমজুর মৃত খাজা মিয়ার ছেলে নুরুজ্জামান নুরুর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ১৯৯০ সালের দিকে তিনি শাজাহানপুরের সন্ত্রাসী সাজেদুর রহমান মুন্নার সহযোগী ছিলেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান নুরুর উত্থান ঘটে জমি দখল, মাদক ব্যবসা করে। শাজাহানপুর উপজেলা সদরের মাঝিড়া থেকে বনানী, ফুলতলা, ফুলদীঘি, শাকপালা, নয়মাইল, আড়িয়াবাজার, সাবরুলসহ বিভিন্ন এলাকা নুরু ও তার বাহিনীর কথায় চলত।
নুরুজ্জামানের নামে ৫ আগস্টের আগে ১৩টি মামলা ছিল। পরবর্তীতে বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া বেশ কয়েকটি হত্যা মামলায় নুরুজ্জামানকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়।