ধর্ম

রোজা রেখে ইনহেলার ও ইনজেকশন নেওয়া যাবে কি?

রোজা পালনের সময় একজন মুসলমানকে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল ধরনের খাদ্য, পানীয় এবং যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হয়। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—রোজা রেখে ইনহেলার বা ইনজেকশন ব্যবহার করা কি রোজা ভঙ্গ করে? আসুন, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করি।

ইনহেলার ব্যবহার: রোজা ভঙ্গ হবে কি?

যাদের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট আছে, তারা ইনহেলার ব্যবহার করতে বাধ্য হন। ফিকহবিদদের মতে:

  • ইনহেলারের মাধ্যমে ফুসফুসে যে ওষুধ প্রবেশ করে, তা সরাসরি খাদ্য বা পানীয়ের মতো পেটে পৌঁছায় না।
  • সেজন্য অনেক ইসলামিক স্কলারদের মতে, প্রয়োজনীয় ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না, যেহেতু এটি সরাসরি শরীরে পুষ্টি বা শক্তি সরবরাহ করে না।

তবে কেউ যদি অন্যভাবে উপশম নিতে পারেন এবং রোজা ভাঙার আশঙ্কা থাকে না, তবে ইনহেলার ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকা উত্তম।

ইনজেকশন নেওয়া: রোজা সহায়ক না রোজা ভঙ্গকারী?

ইনজেকশন সাধারণত দুই প্রকার:

  1. পুষ্টিকর ইনজেকশন — যেগুলো শরীরে খাদ্যের বিকল্প হিসেবে কাজ করে (যেমন: গ্লুকোজ)। এগুলো রোজা ভঙ্গ করে।
  2. ঔষধি বা ব্যথানাশক ইনজেকশন — যেগুলো সরাসরি পুষ্টি সরবরাহ করে না, শুধুমাত্র রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এগুলো রোজা ভঙ্গ করে না।

ফিকহের নিয়ম অনুযায়ী:

  • পুষ্টিকর ইনজেকশন: রোজা ভঙ্গ করবে।
  • ঔষধি ইনজেকশন: রোজা ভঙ্গ করবে না।

বিকল্প সমাধান ও পরামর্শ

  • যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা আছে এবং প্রতিদিন ইনহেলার বা ইনজেকশন নেওয়া জরুরি, তাঁরা ইসলামের বিধান অনুযায়ী ফিদিয়া (ক্ষতিপূরণ) দিয়ে রোজার ফরজ আদায় করতে পারেন।
  • যাঁরা সাময়িক অসুস্থ, তাঁরা পরে সুস্থ হলে কাযা রোজা রাখতে পারেন।

রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার ও ঔষধি ইনজেকশন নেওয়া সাধারণত রোজা ভঙ্গ করে না। তবে পুষ্টিকর ইনজেকশন রোজা ভঙ্গ করবে। শারীরিক অবস্থা ও ইসলামিক বিধানের সমন্বয় করে আলেমদের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই উত্তম।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button