প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা হচ্ছে: এম আব্দুল্লাহ

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ বলেছেন প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার আওতায় নেয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। চলতি অথবা আগামী অর্থ বছরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে বগুড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের চিকিৎসা সহায়তা ও সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ বলেন, একজন পেশাদার সাংবাদিক তার জীবনের সবকিছু ঢেলে দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। যখন সাংবাদিকতার শেষ প্রান্তে এসে যখন হাউসে তার আর জায়গা হচ্ছে না, কর্মক্ষম সাংবাদিক হিসেবে তাকে আর প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে না তখন কিন্তু এক ধরণের অসহায়ত্বের মধ্যে পড়ে যান। সন্তানদের উপর কেউ নির্ভরশীল হন। কেউ কেউ এতটাই অসহায় হয়ে পড়েন যে সামান্য ওষুধ কেনার মতো তাদের অবস্থা থাকে না। এর প্রেক্ষিতে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যখন ছিলেন তখন আমি একটা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলাম। প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার আওতায় আনা যায় কিনা। প্রতি মাসে যদি তাদের ১০ হাজার টাকা করেও দিতে পারি আমরা এতে তার জরুরী ওষুধ, হাত খরচের টাকা চললে অন্ততপক্ষে অন্যের উপর নির্ভরশীলতা তাদের কমে যাবে। তিনি তখন সেটাতে এগ্রি করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় আমরা সেই নীতিমালা নিয়ে কাজ করছি। ইতোমধ্যে নীতিমালা নিয়ে একটি সভাও হয়ে গেছে। নীতিমালাটা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। মন্ত্রণালয় সঠিকভাবে যদি সহযোগিতা করে তবে এই অর্থ বছরে না হলেও আগামী অর্থ বছরে প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার আওতায় আনার চেষ্টা করছি। এটি বাস্তবায়ন করতে পারলে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হবে।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান কারা পাবেন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এম আব্দুল্লাহ আরো বলেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট একটি সাংবাদিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে অসংখ্য ছাত্র জনতার রক্তের মধ্য দিয়ে। এই বৈষম্যহীন সমাজের জন্য যে পরিবর্তনটি আনা হয়েছে, এটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি এখানে কোন রকম দল, মত পথ ব্যক্তিগত রেষারেষি আক্রোশ এগুলোর কোন কিছুর প্রশ্রয় দেবো না। শুধুমাত্র দেখা হবে তার পাওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা। আবেদনের মেরিট আছে কিনা। যদি আবেদনের মেরিট থাকে, আবেদন যদি সঠিক থাকে যেটার ১ লাখ টাকা পাওয়ার ছিলো সেখানে ৫০ হাজার টাকা হলেও পাবেন।
তিনি বলেন, এর আগে আমরা দেখেছি, আমাদের অনেক সাংবাদিকের অনিয়মিত বেতনের কারণে রমজানে খুব কষ্ট পান। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে করে এবারই প্রথম রমজানে ইফতার এবং ঈদ উপলক্ষ্যে খাবারের উপহার প্যাকেজ বিতরণ করেছি। সারাদেশের ১৫০০ সাংবাদিকের হাতে আমরা ইতোমধ্যে এই উপহার পৌছে দিয়েছি। এটাও আমরা প্রথমবারের মতো কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে করেছি।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের জেলা সভাপতি হোসনা আফরোজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারি মহাসচিব ডা. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, নির্বাহী সদস্য মীর্জা সেলিম রেজা, বগুড়া প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ওয়াসিকুর রহমান বেচান, সিনিয়র জেলা তথ্য অফিসার মাহফুজার রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সভাপতি গনেশ দাস, দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল লালু, দৈনিক দূরন্ত সংবাদের সম্পাদক সবুর শাহ লোটাস, দৈনিক বগুড়া’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রেজাউল হাসান রানু, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সাধারন সম্পাদক এস এম আবু সাঈদ।
অনুষ্ঠানে ২১জন সাংবাদিককে চিকিৎসা অনুদান এবং ১৯জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তির চেক প্রদান করা হয়।