গরমে বাড়ছে হজমের সমস্যা, সতর্ক ও করণীয়

গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হজমের সমস্যায় ভুগছেন অনেক মানুষ। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের কর্মব্যস্ত মানুষ এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অতিরিক্ত ঘাম, পানিশূন্যতা ও অনিয়মিত খাবার গ্রহণকে দায়ী করা হচ্ছে এই সমস্যার জন্য।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরমকালে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়, ফলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। এতে করে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এছাড়া, এই সময় অনেকেই তেল-চর্বি ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন, যা হজমে সমস্যা তৈরি করে।
বাড়ছে গ্যাস্ট্রিক ও ডায়রিয়ার রোগী
রাজধানীর বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে গ্যাস্ট্রিক, বমি, ডায়রিয়া ও পেট ব্যথাজনিত রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজা হক বলেন, “গরমকালে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়। অনেকেই বাসি খাবার বা বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। এতে হজমে সমস্যা বাড়ছে। পানিশূন্যতা আর গরমে অতিরিক্ত ক্লান্তিও সমস্যা আরও জটিল করছে।”
কী করণীয়?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, হজমজনিত সমস্যা থেকে বাঁচতে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলা জরুরি—
- প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে
- খাওয়ার সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা
- বাসি ও ফ্রিজে রাখা খাবার না খাওয়া
- তেল-মসলা ও ভারী খাবার এড়িয়ে সহজপাচ্য খাবার খাওয়া
- অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় ও কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলা
শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ সতর্কতা দরকার চিকিৎসকরা আরও জানান, শিশু ও বয়স্কদের হজমশক্তি তুলনামূলকভাবে দুর্বল হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে। এজন্য তাদের খাবার নির্বাচনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যসচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গরমে সুস্থ থাকতে হলে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা ও পরিমিত খাবার গ্রহণই হতে পারে একমাত্র সমাধান।