বগুড়া জেলারাজনীতি
ট্রেন্ডিং

‘সন্ত্রাসী প্লাটফর্ম আ. লীগ এই বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারে না’

জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, খুনি সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে আর কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারে না। আগামীর বাংলাদেশে এ সকল সন্ত্রাসীদেরকে যেখানে দেখবে- বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা, শহীদ পরিবার, আহত জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদেরকে প্রতিহত করবে।

বুধবার বিকেলে বগুড়ার পৌরপার্কের শহীদ টিটু মিলনায়তন প্রাঙ্গনে এনসিপি বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তবে সমাবেশ শুরুর দিকে ছাত্র আন্দোলনের একাংশ “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে। এ সময় এনসিপির নেতাকর্মীদের সাথে তাদের প্রথমে কথা-কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এমনকি সারজিস আলম বক্তব্য দেয়ার সময়ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
তবে এই সংঘর্ষ নিয়ে কোনো পক্ষের সরাসরি বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে বগুড়া অন্যতম রণক্ষেত্রের একটি জেলা ছিল। এই বগুড়া জেলায় একটার পর একটা আমার ভাইদের শহীদ করা হয়েছে। আমার ভাই বোনদের শরীর থেকে রক্ত ঝরানো হয়েছে। এই বগুড়া জেলায় বিগত ১৬ বছর বগুড়াকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। জেলার নাম শুনলেই কারো চাকরি হয়নি। চাকরির প্রমোশন আটকে দেয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নেও চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে বগুড়া।

`এই আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেই ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেনি। তারা পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনাসদস্য, শাপলা চত্বরসহ দেশের শতশত মানুষেকে হত্যা করেছে। এই আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র ২৪ এর অভ্যুত্থানে আমাদের ভাইবোনকে হত্যা করেনি। এই আওয়ামী লীগ নির্বিচারে নামে বেনাতে অসংখ্য মানুষকে খুন, গুম হত্যা করেছে। এই খুনি হাসিনা ও তার সন্ত্রাসী প্লাটফর্ম আওয়ামী লীগ এই বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারে না। এই আওয়ামী লীগ ব্যক্তির নাম ও জেলার নাম ধরে বৈষম্য করেছে।’

তিনি আরো বলেন, বগুড়ায় একটি বিমান বন্দর থাকলেও সেটিকে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। জনগণের জন্য সেটি উন্মুক্ত করা হয়নি। একটি আধুনিক মানের হাসপাতাল থাকলেও সেটিকে চতুর্থ শ্রেণির হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থাকার পরেও এখানে কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করা হয় না। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই। তিনি ঢাকা থেকে বগুড়ার সাথে সরাসরি রেললাইন চালুরও দাবী জানান।
সারজিস আলম বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম মমতাজ উদ্দিনের ছেলের নাম উল্লেখ করে বলেন, বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলন এই জেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্যালেস মিউজিয়াম দখল করেছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা দখল করেছে। তার মত অসংখ্য আওয়ামী দালাল বগুড়ায় রয়েছে। এসব দালালদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

তিনি বলেন, বগুড়ার মাটিকে জানিয়ে দিতে চাই যেই বগুড়ার মাটিকে কেন্দ্র করে ওই খুনিরা সবচেয়ে বেশি বৈষম্য করেছিল, সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছিল, সেসকল খুনিরা এই বাংলাদেশে যেন প্রশ্রয় না পায়- এটাই হোক আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বগুড়া জেলা সংগঠক আব্দুল্লাহিত তাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনসিপি’র যুগ্ম-মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাকিব মাহদী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন এনসিপি’র যুগ্ম-সদস্য সচিব তাহসিন রিয়াজ, যুগ্ম-মূখ্য সংগঠক এ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, যুগ্ম-মূখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, কেন্দ্রিয় সংগঠক নাজমুল হাসান সোহাগ,, সাদিয়া ফারজানা প্রীতি, দ্যুতি অরণ্য প্রীতি, কেন্দ্রীয় সংগঠক সাব্বির আহমেদ, শওকত ইমরান, সৈয়দ আহমেদ লিটন, ডা. সানি, মুশফিকুর রহমান, নাইম ইসলাম, শহীদ রাতুলের ভাই হামজা, শহীদ পরিবারের সদস্য উজ্জল প্রমূখ। সমাবেশ মঞ্চে বগুড়ার শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button