তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম ও আর্দ্রতার কারণে মানুষের শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি বিপজ্জনক অবস্থা হলো হিটস্ট্রোক। এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যর্থ হয় এবং শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে পড়ে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে হিটস্ট্রোক মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
হিটস্ট্রোক কী?
হিটস্ট্রোক (Heat Stroke) হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F (৪০°C) বা তার চেয়েও বেশি উঠে যাওয়া, যার ফলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হয়। এটি চিকিৎসা না করলে প্রাণঘাতী হতে পারে।
হিটস্ট্রোকের কারণ
দীর্ঘ সময় ধরে রোদে থাকা বা খোলা জায়গায় কাজ করা
অতিরিক্ত গরমে কষ্টকর শারীরিক শ্রম
পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঠান্ডা পরিবেশে না থাকা
গরমে ভারী কাপড় পরা
শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে
সাধারণ লক্ষণ
শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া, ঘাম না হওয়া
ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে ওঠা
মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা
দ্রুত ও দুর্বল নাড়ি
বমি ভাব বা বমি
বিভ্রান্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
প্রতিকার ও করণীয়
১. সরাসরি ছায়াযুক্ত বা শীতল স্থানে নিয়ে যান
২. শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা করুন – ঠান্ডা পানি ছিটানো, ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মোছানো
৩. পানি বা ওআরএস খাওয়ানোর চেষ্টা করুন (অচেতন না থাকলে)
৪. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে স্থানান্তর করুন (যদি সম্ভব হয়)
৫. জরুরি চিকিৎসা নিন – হিটস্ট্রোক সন্দেহ হলে দেরি না করে হাসপাতালে যান
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
প্রচণ্ড রোদে বের না হওয়া
হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা
পর্যাপ্ত পানি পান করা
খালি পেটে রোদে কাজ না করা
ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা
উপসংহার
হিটস্ট্রোক একটি গুরুতর সমস্যা হলেও সচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতির মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিজের পাশাপাশি আশপাশের মানুষদেরও এ বিষয়ে সচেতন করুন, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন।