বাবার সম্পত্তি প্রতারণা করে লিখে নিলে করণীয় কী? যা বলছে আইন

বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি যদি কেউ প্রতারণা করে নিজের নামে লিখে নেয়, তাহলে কি সেই সম্পত্তি ফেরত পাওয়া সম্ভব? উত্তর—হ্যাঁ, তবে তার জন্য আইনি পথে সঠিকভাবে এগোতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায়, অসুস্থতা, বৃদ্ধাবস্থা কিংবা মানসিক অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে বাবার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য প্রতারকরা জাল দলিল তৈরি করে। আবার কখনো কখনো ভয় দেখিয়ে বা ফুসলিয়ে বাবার কাছ থেকে দলিল আদায় করা হয়। এসব ক্ষেত্রে আইন কী বলে, এবং কীভাবে আপনি নিজের অধিকার ফিরে পেতে পারেন—তা নিয়েই আজকের বিশেষ প্রতিবেদন।
সম্পত্তির মালিক কে?
বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় তার সম্পত্তির মালিক তিনি নিজেই। তিনি চাইলে যেকাউকে সম্পত্তি দিতে পারেন—দান, বিক্রি বা হেবা করে। কিন্তু যদি প্রমাণ হয় যে তিনি স্বেচ্ছায় নয়, প্রতারণার মাধ্যমে দলিল করেছেন, তাহলে সেই দলিল বাতিলযোগ্য।
কোন কোন অবস্থায় দলিল বাতিলযোগ্য?
আইন অনুযায়ী, নিম্নোক্ত অবস্থায় দলিল বাতিল করা সম্ভব:
বাবার মানসিক বা শারীরিক অক্ষমতার সময় দলিল হয়েছে
স্বাক্ষরের বদলে টিপসই নিয়ে দলিল সম্পাদিত
স্বাক্ষর পূর্বের স্বাক্ষরের সঙ্গে মেলে না
বাবা নিজেই বলছেন, প্রতারণা করে দলিল নেওয়া হয়েছে
এইসব ক্ষেত্রে ‘Specific Relief Act, 1877’ অনুযায়ী সিভিল কোর্টে মামলা করা যায়।
কী প্রমাণ লাগবে?
বাবার পুরনো স্বাক্ষরযুক্ত দলিল (চাকরি, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নথি)
হাসপাতালের কাগজপত্র (যদি অসুস্থ ছিলেন)
ইউনিয়ন পরিষদের সনদ
প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের সাক্ষ্য
দলিল করার সময়কার পরিস্থিতির বর্ণনা
যদি দলিল বৈধভাবে করা হয়ে থাকে?
যদি দেখা যায়—
✔️ বাবা সুস্থ ছিলেন
✔️ স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছেন
✔️ দলিল রেজিস্ট্রি যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে
তবে সেই দলিল বাতিল করা যাবে না—even যদি পারিবারিক চাপে দিয়ে থাকেন।
করণীয় কী?
প্রথমেই একজন অভিজ্ঞ সিভিল আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করুন।
প্রমাণ সংগ্রহ করুন এবং সংরক্ষণ করুন।
‘দলিল বাতিলের মামলা’ করুন সঠিক ধারা অনুযায়ী।
বিশেষ পরামর্শ
ভুল পথে মামলা করলে শুধু সময় নয়, অর্থ এবং মানসিক শক্তিও ক্ষয় হয়। তাই সঠিক তথ্য ও প্রমাণসহ আইনি পরামর্শ নিয়ে পথ চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।