আওয়ামী লীগরাজনীতি
ট্রেন্ডিং

জনগণের কাছেই ক্ষমা চাইব, দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে: ওবায়দুল কাদের


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ তখনই আসবে, যখন আমরা দেশের মাটিতে ফিরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করতে পারব।” কলকাতা থেকে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

আত্মগোপনের দিনগুলো: বাথরুমে আশ্রয়, মুখে মাস্ক

জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের সময় তিন মাস আত্মগোপনে ছিলেন বলে দাবি করেন কাদের। সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয় ৫ আগস্ট, যখন ঢাকামুখী বিক্ষোভের খবর পেয়ে তিনি জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে একটি ভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেন।

তিনি বলেন, “ঘর আক্রান্ত হলে আমি ও আমার স্ত্রী বাথরুমে লুকাই। সেখানে অনেকক্ষণ থাকতে হয়। শেষপর্যন্ত যারা লুটপাট করছিল, তারা বাথরুমের দরজায় আঘাত করে। তখন আমি বলি, ‘খুলে দাও।’”

দরজা খোলার পর উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা নানা ধরনের স্লোগান দেন। কেউ বলছিলেন, “জনতার হাতে তুলে দাও,” আবার কেউ চাইছিলেন সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ। শেষ পর্যন্ত কাদেরকে শার্ট বদলে, মুখে মাস্ক পরিয়ে একটি ইজিবাইকে করে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সেনাবাহিনীর ভাষণ ও আতঙ্কের রাত

৫ আগস্ট রাতে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ভাষণের আগাম বার্তা পেয়ে তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পারেন বলে জানান কাদের। যদিও অনেকে সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কাদের দাবি করেন, তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি বাসায় ছিলেন এবং ক্যান্টনমেন্টে যাননি।

ভুল স্বীকার প্রসঙ্গে বক্তব্য

ভুল স্বীকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যদি কোনো ভুল করে থাকি, তাহলে দেশের জনগণের কাছেই ক্ষমা চাইব, দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে। দেশের বাইরে থেকে ক্ষমা চাওয়া যায় না।”

তাঁর দাবি, আন্দোলনটি কোনো গণ-উত্থান ছিল না বরং ‘সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান’। তবে ছাত্র আন্দোলনের ভেতরে কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

সরকার পতনের আগাম বার্তা

৪ আগস্ট রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল বলে জানান কাদের। তবে তাঁর অভিযোগ, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতির গুরুত্ব যথাযথভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিল।

বাহিনী ব্যবহারের দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহারের দায় তিনি দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর। বলেন, “আমরা দলীয়ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছিলাম,”—তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব হয়নি বলেও স্বীকার করেন।

কোথায় ছিলেন কাদের?

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা সেনানিবাসে আশ্রয় নিলেও সেনাবাহিনীর প্রকাশিত তালিকায় কাদেরের নাম ছিল না। তিনি দাবি করেন, “সেনানিবাসে যাওয়ার কোনো চিন্তা আমার ছিল না।”

এছাড়া ভারতে যাওয়ার আগেও শেখ হাসিনা বা অন্য কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button