
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার বাদী মো. মিজানুর রহমান (৩৩) নিজেই শিকার হয়েছেন এ চক্রের ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের।
ঘটনাটি ঘটে গত ১১ এপ্রিল। মিজানুর রহমান তার ভাড়া বাসা থেকে নিজ বাড়ি, শাবরুল গ্রামে যাওয়ার পথে রানিরহাট বাজারের সামনে পৌঁছালে তিনটি মোটরসাইকেলে আসা ১০-১২ জন যুবক তার পথরোধ করে। তারা ছুরি ও দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে তাকে অপহরণ করে শাজাহানপুর থানাধীন নন্দকুল গ্রামের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয় অপহরণকারীরা।
পরবর্তীতে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ বিকাশে এক লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। প্রাথমিকভাবে ১৩ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। এছাড়াও ভিকটিমের বিকাশ একাউন্ট থেকে জোরপূর্বক ১৬ হাজার টাকা তুলে নেয় এবং তার মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে এক লাখ টাকা আদায় করে। এমনকি তার কাছ থেকে সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নেয় অপহরণকারীরা।
বিষয়টি নিয়ে শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা (নং-৩২, তারিখ-১২/০৪/২০২৫) দায়ের করা হয়। মামলায় মোট ৩ জনকে নামীয় আসামি করা হয় এবং আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ তদন্তে নাম পায় মো. কামরান মন্ডল শামীম (৩৮), রাকিব মন্ডল (৩২) এবং মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি মো. সাকিব (২২)-এর। কামরান ও সাকিবের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, অস্ত্র এবং মারামারির মতো গুরুতর অভিযোগ।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মো. শরিফুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ১৩ ও ১৭ জুন তারিখে এই তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীতে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।