
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তা ঘুষ দাবি করেছেন—এমন অভিযোগ তুলেছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন। পোস্টের সঙ্গে তিনটি ভিডিও ক্লিপও যুক্ত করেন তিনি।
পোস্টে হাসনাত লিখেন, “স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল এখন এক লাখ টাকা! আপনার নামে কোনো অভিযোগ না থাকলেও ক্লিয়ারেন্স নিতে এই টাকা দিতে হবে। ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে এ অর্থ চাওয়া হয় দুদকের ডিজি আকতার ও ডিডি পরিচয়ধারী এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে।”
তিনি আরও লেখেন, “তাকে বলা হয়েছে—আপনি একজন ডাক্তার, আপনার টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান। দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এখন এক লাখ টাকা। টাকা না দিলে নাকি ‘খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে’। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার নামের সেই ব্যক্তি আবার ফোন করে জানতে চান—টাকা দেবেন কি না।”
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, মাহমুদা মিতু ৫ আগস্টের পরে রেড ক্রিসেন্টে যোগ দেন। অথচ দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী আমলের দুর্নীতি নিয়ে, কিন্তু সেই সময়ের প্রকৃত দায়ীদের বাদ দিয়ে বর্তমান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হয়রানি করা হচ্ছে।
হাসনাত আরও লেখেন, “দুদকের এ ধরনের কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী দলের বহু নেতাকে হয়রানি করলেও সরকারি দলের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে তারা নীরব থেকেছে। আমরা ভেবেছিলাম, ৫ আগস্টের পর দুদক বদলাবে। কিন্তু তারা বরং এখন এক কাপ চায়ের দাম এক লাখ টাকা করে বসিয়েছে।”
তার অভিযোগ, “যে অপরাধ কেউ করেননি, তাদের কাছ থেকেও টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে। তাহলে যাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের কাছ থেকে কত নেওয়া হয়েছে?”
তিনি বলেন, “আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—মাহমুদা মিতু কেন, আমার নামেও যদি এক পয়সার দুর্নীতির প্রমাণ থাকে, সেটা জনসমক্ষে প্রকাশ করুন, মামলা করুন। কিন্তু কাউকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি কেন করা হচ্ছে?”
পোস্টের শেষাংশে হাসনাত লেখেন, “দুদক যেন আর আগের মতো না থাকে, আমরা সেটা চাই। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আমলাতন্ত্র আগের মতোই বিষদাঁত নিয়ে ফিরে এসেছে। এই বিষদাঁত যদি না ভাঙা যায়, তাহলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে।”