
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে। লিখিত পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত, এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক অংশ।
এবারের পরীক্ষায় মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রয়েছেন ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজার ৪০ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৯ হাজার ৪৭৭ জন। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে।
২০২৪ সালের তুলনায় এবারের পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। গত বছর অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়েছে কঠোর প্রস্তুতি। প্রশ্নফাঁস ও নকল রোধে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বিভ্রান্তিকর গুজব ঠেকাতে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ, প্রশ্নপত্র পরিবহন ও সংরক্ষণের প্রতিটি ধাপে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৩৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর জন্য। নির্দেশনায় বলা হয়েছে:
প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক রাখতে হবে
পরীক্ষাকক্ষে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে
প্রশ্নপত্র আনতে হবে ট্যাগ অফিসার ও পুলিশের উপস্থিতিতে
নির্ধারিত সেট অনুযায়ী প্রশ্নপত্র খোলা এবং অব্যবহৃত সেট ফেরতের ব্যবস্থা রাখতে হবে
কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনে মাইকিং করে সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশনা
কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও ‘নকল প্রতিরোধ’ পোস্টার লাগানো বাধ্যতামূলক
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। কেন্দ্রে শুধুমাত্র এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহার করা যাবে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:
পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে
ওএমআর ফরমে নির্ভুল তথ্য ও বৃত্ত ভরাট নিশ্চিত করতে হবে
উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না
শুধুমাত্র সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে
এমসিকিউ ও সৃজনশীল অংশের মাঝে কোনো বিরতি থাকবে না
পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
তত্ত্বীয়, এমসিকিউ ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা শুধু প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। নিজ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা না হয়ে স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি পত্রে স্বাক্ষর দিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পরীক্ষার সর্বস্তরে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অনিয়মের সুযোগ না থাকে।