
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেছেন, রাজনৈতিক সরকারের অধীনে এক হাজার বছরেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমি স্বীকার করছি—২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ছিল ডামি নির্বাচন। রাজনৈতিক সমঝোতার অভাবে তা একতরফা হয়ে গেছে। তবে আমাকে কেউ টাকা দেয়নি, আমিও কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। জীবনে কখনও দুর্নীতি করিনি, কেউ এমন অভিযোগ আনতেও পারেনি।”
বিচারক এ সময় প্রশ্ন করেন, “রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহকারীরা অতীতে সর্বোচ্চ ২৫-৩০ হাজার টাকা পেতেন, কিন্তু আপনার সময়ে তাদের পারিশ্রমিক বেড়ে পাঁচ লাখ টাকা হয়েছে। আপনি কি এর দায় নেন?” উত্তরে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমি জানি না কে কত পেয়েছে। একটি নির্বাচনে প্রায় ৮ লাখ লোক কাজ করে, তাদের কাউকে আমি চিনিও না।”
বিচারক আরও প্রশ্ন তোলেন, “আপনি তখন দেশসেরা অফিসার ছিলেন। নির্বাচনে অনিয়মের দায় নিয়ে আপনি পদত্যাগ করেননি কেন?” জবাবে হাবিবুল বলেন, “পদত্যাগ করলে ভালো হতো। তবে অতীতে কোনো নির্বাচনই বিতর্কমুক্ত হয়নি। শেখ মুজিবুর রহমানও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে বড় সংস্কার দরকার, না হলে আগামী এক হাজার বছরেও সেটা সম্ভব হবে না।”
এদিন দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয় হাবিবুল আউয়ালকে। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন। সবপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিচারক বলেন, “আপনার কাছে জাতির প্রত্যাশা ছিল অনেক। আপনি বিতর্কমুক্ত নির্বাচন দিতে পারেননি।” জবাবে হাবিবুল বলেন, “বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনই কি বিতর্কিত হয়নি? ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতার লোভ ভয়াবহ। রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া কিছুই সম্ভব না।”