বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা
নানা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।
শনিবার (২৮ জুন) ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ফেসবুক পোস্টে উমামা লেখেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে আমার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শেষ হলো। এনসিপি গঠনের পর জুলাই অভ্যুত্থানের অসমাপ্ত কাজের দায় থেকে ব্যানারটি নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। তবে স্বাধীনভাবে কাজ করায় অনলাইন-অফলাইনে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করা হয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির নামে তার বিরুদ্ধে ‘স্মিয়ার ক্যাম্পেইন’ চালানো হয়েছে। জুনিয়রদের ব্যবহার করে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে, এমনকি সংগঠনের অফিসিয়াল পেজ থেকেও তার বিরুদ্ধে পোস্ট হয়েছে।
উমামা লেখেন, “একটা সময় দেখেছি প্ল্যাটফর্মটিকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলেছে সুবিধাবাদীরা। অনেকেই পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল, কিন্তু তারা সুবিধাবাদীদের কাছে জায়গা করে নিতে পারেনি।”
তিনি জানান, এপ্রিল-মে মাস থেকেই প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। যদিও সরাসরি পদত্যাগপত্র জমা দেননি, তবে সব কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন। এসময় তিনি ‘Empowering Our Fighters’ ও বিজ্ঞানের ওপর কাজে মনোযোগ দেন।
কাউন্সিল নির্বাচন প্রসঙ্গে উমামা জানান, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও শেষ মিনিটে একটি ভোট দিয়ে এসেছেন, যাতে ভালো কিছু হবার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু পরে দেখতে পান, নির্বাচনেও স্বেচ্ছাচারিতার চিত্রই প্রকাশ পেয়েছে।
সবশেষে তিনি লেখেন, “অভ্যুত্থানের স্বপ্নকে বাঁচাতে প্ল্যাটফর্মে এসেছিলাম, কিন্তু এখানে এসে দেখেছি সংস্কার, শহিদ, আহত—এসব কেবল মুখের বুলি। অনেক ছাত্র এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছিল পরিবর্তনের আশায়, সবাই শুধু ছলনা পেয়েছে।”
তিনি প্ল্যাটফর্ম থেকে দেওয়া ভোট প্রত্যাহার করে নেন এবং বলেন, “আমি রুহের ভেতর থেকে বদদোয়া দিচ্ছি এই মোনাফেকদের। রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারতাম, কিন্তু পারিনি। এখন সবকিছু ঝেড়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”
