‘চিকিৎসা না পেলে আবার জুলাই’: আহতদের হুঁশিয়ারি

রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ আহতরা অভিযোগ করেছেন, তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ঈদের ছুটির অজুহাতে হাসপাতালে তাদের ভর্তি না নিয়ে চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা। কেউ কেউ ফ্লোরেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
শনিবার (৫ জুলাই) নিটোর পরিদর্শনে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটির সদস্যরা। এসময় আন্দোলনে আহতরা অভিযোগ করেন, যথাযথ চিকিৎসা না পেলে আবারও ‘জুলাই’ ঘটবে।
আহত সৌরভ বলেন, “এখানে কাউকেই সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। ঈদের আগে যাদের ভর্তি করা হয়েছিল, তাদের বাড়ি যেতে বলা হয়। বলা হয়, পরে ফিরে এলে আবার ভর্তি নেওয়া হবে। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। এখন অনেকের শরীরে পচন ধরেছে। আমরা সবাই এক কথা বলব—আমাদের চিকিৎসা দরকার। সুচিকিৎসা না পেলে আবারও জুলাই হবে।”
চিকিৎসাধীন আশিক বলেন, “বাড়ি থেকে ১১ দিন পর এসে ভর্তি হতে পারিনি। এখন ফ্লোরেই ঘুমাই, কোনো চিকিৎসা পাই না। তবু আশায় আছি।”
গুলিবিদ্ধ আয়েশা বলেন, “চিকিৎসা ও সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমি কিছুই পাইনি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র সিনথিয়া জাহিন আয়েশা বলেন, “একজন মা অভিযোগ করেছেন, ঈদের ছুটিতে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন। ফিরে এসে ছেলেকে আর ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল। তিনি বাসা-বাড়িতে কাজ করে ছেলের ওষুধ ও খাবারের টাকা জোগাড় করছেন।”
কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান বলেন, “চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। আহতদের প্রতি যে অবহেলা করা হচ্ছে, তা অমানবিক। হাসপাতালে এসে আমরা দেখেছি অনেকেই চিকিৎসা পাচ্ছেন না। কেউ কেউ বলছে, আহতদের মধ্যে সিন্ডিকেট ও গ্রুপিং আছে। কিন্তু জুলাই আন্দোলনের সময় তো সবাই একক লক্ষ্যে নেমেছিল—শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে।”
তিনি আরও বলেন, “যাদের প্রয়োজন, তাদের বিদেশেও পাঠানো উচিত। আমরা নিটোরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আবুল কেনানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেন, ‘আমি নিরুপায়।’ কেন নিরুপায়—এই প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি। বলেছেন, একমাত্র স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তা বলতে পারবেন। আমরা তার সঙ্গেও কথা বলব।”