
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে। ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির তদন্ত ও ফরেনসিক যাচাই অনুযায়ী, এই অডিওতে শেখ হাসিনাকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে “প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার” করার অনুমতি দিতে শোনা যায়।
রেকর্ডিংয়ে তাকে বলতে শোনা যায়, “তারা (নিরাপত্তা বাহিনী) যেখানেই তাদের (বিক্ষোভকারী) পাবে, গুলি করবে।” অডিওটি গত ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করা এক ফোনকলের বলে জানা গেছে। কথা বলেছিলেন একজন অজ্ঞাত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে।
বিবিসি জানায়, তারা ব্রিটিশ অলাভজনক সংস্থা ইয়ারশট-এর মাধ্যমে অডিওটির ফরেনসিক পরীক্ষা করিয়েছে। ওই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, অডিওটিতে কোনো কাটাছেঁড়া বা এডিটিং হয়নি, এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম।
রেকর্ডিংয়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ENF) পাওয়া গেছে, যা সাধারণত লাইভ পরিবেশে রেকর্ড হওয়া অডিওর বৈশিষ্ট্য। স্বর, ছন্দ, শ্বাসের শব্দসহ টেকনিক্যাল বিশ্লেষণে স্পিকার হিসেবে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলে গেছে বলেও জানায় তারা।
আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, “রেকর্ডিংটি সত্য কি না তা নিশ্চিত নই। এটি বেআইনি উদ্দেশ্যপ্রসূত হতে পারে, এবং এর প্রতিক্রিয়াও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।”
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, “এই রেকর্ডিং শেখ হাসিনার ভূমিকার অকাট্য প্রমাণ, এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হতে পারে।” তিনি বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, ICT এ পর্যন্ত ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন গ্রেফতার রয়েছে।
গত বছরের গ্রীষ্মে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, গুম ও গুলির অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনার তদন্তে বাংলাদেশে একাধিক বিচারিক কার্যক্রমও চলছে।