শেরপুর উপজেলা
ট্রেন্ডিং

শেরপুরে স্কুলে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, ছাত্র নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনয়নের ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বপ্নকে মারধরের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


ওই স্কুলের একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। শুধু স্কুলেই নয়, অভিযুক্ত কিশোরকে নিয়ে এলাকায় রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক ছাত্র পরিকল্পিতভাবে একই ক্লাসের স্বপ্নকে ডেকে এনে মারধর করছে এবং সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করতেও বলছে অন্যদের। পরে আরও তিন কিশোর এই মারধরে অংশ নেয়।

স্কুল থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত চারজনই ভীমজানি এলাকার বাসিন্দা এবং ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

মারধরের শিকার স্কুলছাত্র স্বপ্ন জানায়, গত রবিবার পরীক্ষা শেষে আমাকে ডেকে এনে মারধর করেছে। কিন্তু কেন মারছে সেটাও আমি জানি না।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভিডিও সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। শিক্ষার্থীদের মারধর, হুমকি, এমনকি দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে।

ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিদ্যুৎ জানান, এই কিশোর গ্যাংদের কারণে আমি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি, পরীক্ষাও দিচ্ছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, নবম শ্রেণির ওই ছাত্র প্রায়ই বার্মিজ চাকু নিয়ে স্কুলে আসে এবং যেকোনো অজুহাতে শিক্ষার্থীদের চাকু দেখিয়ে হুমকি দেয়, মারধর করে। তার কথা না শুনলেই বিপদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুধু স্কুলে নয়, ওই ছাত্র এলাকায় ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছে।

হৃদয় নামে স্থানীয় এক যুবক জানান, শুধু স্কুলেই নয়, এলাকাতেও সে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধুকে চাকু দিয়ে আঘাত করেছিল। ভাগ্য ভালো, প্রাণে বেঁচে গেছে।

এমনকি সম্প্রতি ছুরিকাঘাতের ঘটনায় এক কিশোর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। সেই ঘটনাতেও জিম জড়িত।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কিশোর দাবি করে, আমার ভাতিজিকে ডিস্টার্ব করেছিল স্বপ্ন, এজন্য তাকে ডেকে চড়-থাপ্পড় মেরেছি। তবে চাকু নিয়ে ঘোরাফেরা বা অন্যদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই একটি ছেলের কারণে বিদ্যালয়ে একের পর এক বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। বহুবার সতর্ক করার পরেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় দুটি ছেলে এসে চাপ দেওয়াতে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আসিফ খান জানান, শিক্ষার্থীরা স্কুলের পোশাক পড়ে একটি ছেলেকে মারধর করছে। এ ঘটনায় অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন বলেন, ভিডিওটি আমিও দেখেছি। কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button