
পাকিস্তানে মৌসুমের এক মাস আগেই জুলাই থেকে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি হওয়ায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮০ জন, আহত হয়েছেন ৫০০ জনেরও বেশি। পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) এই তথ্য জানিয়ে জানিয়েছে, আগামী দিনগুলোতেও আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এনডিএমএ জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও হিমবাহ গলনের গতি বৃদ্ধির ফলে বর্ষা মৌসুমে এ ধরনের অস্বাভাবিক তীব্রতা দেখা যাচ্ছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইনাম হায়দার মালিক পিটিভি নিউজকে বলেন, এক মাস আগেই বর্ষা শুরু হয়েছে এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনী, পিডিএমএ ও এনজিওসহ বিভিন্ন অংশীদার যৌথভাবে কাজ করছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রদেশে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নাগরিকদের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যাওয়ার পাশাপাশি ঘরের ভেতরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিন্ধু প্রদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা
পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর (পিএমডি) জানিয়েছে, সিন্ধু প্রদেশে করাচি, হায়দ্রাবাদ, সুক্কুর, থাত্তা, বাদিন, লারকানা, জ্যাকোবাবাদসহ বেশ কয়েকটি শহরে ভারী বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সিন্ধুর নিম্নাঞ্চলে বন্যার সতর্কতা জারি করেছে এনডিএমএ।
পাঞ্জাবে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস
পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, আজ রোববার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত প্রদেশটির বেশিরভাগ জেলায় তীব্র বাতাস ও বৃষ্টিপাত হতে পারে। রাওয়ালপিন্ডি, মুরি, গালিয়াত, লাহোর, ফয়সালাবাদ, গুজরানওয়ালা, মুলতান, ডেরা গাজি খানসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
চেনাব, ঝিলাম, রবি, শতদ্রু ও সিন্ধু নদীর পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়ে এসব নদ-নদীর আশেপাশে উচ্চ-ঝুঁকির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
খাইবার পাখতুনখোয়া ও ইসলামাবাদেও বন্যা সতর্কতা
খাইবার পাখতুনখোয়ায় হিমবাহ গলে ও মৌসুমী বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশেষ করে কাবুল, সোয়াত, পাঞ্জকোরা, বারা ও কালপানি নালাগুলোতে। এনডিএমএ পাহাড়ি অঞ্চলে যানবাহন চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।
ইসলামাবাদ ও মধ্য পাঞ্জাবেও ২৪ জুলাই পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
রাওয়াল বাঁধে সতর্কতা ব্যবস্থা
সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের ফলে রাওয়াল বাঁধে পানিস্তর ১,৭৪৮ ফুটে পৌঁছেছে, যা এর ধারণক্ষমতার সর্বোচ্চ সীমা। রোববার সকাল ৬টায় বাঁধের স্পিলওয়ে খুলে দিয়ে পানিস্তর কমানো হচ্ছে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।