রাজনীতি

দোয়া চাইলেন পলক, একজন বললেন: “কাইন্দেন না”

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের এক মামলায় সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে কারাগার থেকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। তাকে রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আজ ছিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন, তবে তা জমা পড়েনি। শুনানি শেষে তাকে আবার হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাকে প্রিজনভ্যানে তোলার জন্য হাজতখানা থেকে বের করে পুলিশ।

তখন দেখা যায়, পলকের দুই হাতে হাতকড়া, মাথায় পুলিশের হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। প্রিজনভ্যানের দিকে নেওয়ার সময় তার কাছে ছুটে আসেন কয়েকজন সাধারণ মানুষ, যারা পরে নাটোরের বাসিন্দা বলে শনাক্ত হন। পলক তাদের দেখে হেসে বলেন, “আমার জন্য দোয়া করবেন।” তারা জবাবে বলেন, “আপনার জন্য দোয়া করি।”

পরে পলককে প্রিজনভ্যানে তোলা হলে তার হাতের হাতকড়া ও মাথার হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর তিনি দাঁড়িয়ে লোহার ফোকর দিয়ে উপস্থিত জনতার দিকে তাকিয়ে বলেন, “সবার জন্য দোয়া করি, আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন। সবাই সাবধানে থাকবেন।”

তখন একজন বলে ওঠেন, “কোনো টেনশন কইরেন না, ভাই।” সেই কথা শুনে পলকের চোখে জল চলে আসে। তিনি কান্না শুরু করলে ওই ব্যক্তি বলে ওঠেন, “পলক ভাই, কাইন্দেন না।”

এর কিছুক্ষণ পর হাজতখানার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়ে আসেন। এরপর প্রিজনভ্যানটি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওনা দেয়। পলক ভ্যানের ভেতর চুপচাপ বসে থাকেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ১৫ আগস্ট গ্রেপ্তার হন পলক। আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন জানান, পলকের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৭০টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, রিমান্ড হয়েছে মোট ৬২ দিন। এসব মামলাকে তিনি রাজনৈতিক হিসেবে উল্লেখ করেন।

২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই মামলা হয়েছে এবং তদন্ত এখনো চলমান।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button