বগুড়া জেলা
প্রধান খবর

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির ছায়া: বগুড়াতেও বাড়ছে বিমানের ভয়

মাসুম হোসেন: এক বছরের মধ্যে দুটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বগুড়া। দুটি বিমানই বিমান বাহিনীর ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর স্কুল এরুলিয়া বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর পরই দুর্ঘটনা কবলিত হয়। যদিও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে কাঁপন লেগেছে স্থানীয়দের মাঝে। ভয় বাড়িয়েছে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে ব্যাপক হতাহতের ঘটনাও।

এসব কী শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে রয়েছে গভীর কোন অবহেলা?- এমন প্রশ্নও জেগেছে বগুড়াবাসীর মনে।

আলুর খেতে বিমানের জরুরি অবতরণ

২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় উড্ডয়নের পর পরই এরুলিয়া বিমানবন্দরের কাছাকাছি আলুখেতে জরুরি অবতরণ করে একটি প্রশিক্ষণ বিমান (পিটি-৬ মডেল)। যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারালেও সেটিকে জরুরি অবতরণে সক্ষম হন ক্যাপ্টেন মাহবুব ও স্কোয়াড্রন লিডার হালিমুর।

সে সময় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরও (আইএসপিআর) জানায়, এটি যান্ত্রিক ত্রুটির ফল এবং বিমানটি মেরামতযোগ্য।

বাঁশবাগানে বিধ্বস্ত অন্যটি

২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর দুপুরে ফের দুর্ঘটনায় পড়ে একই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান। এবারের ঘটনাস্থল কাহালু উপজেলার শিমুলিয়া গ্রাম। প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি দক্ষিণ দিক ঘুরে গিয়ে একটি বাঁশবাগানে বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় ও পেছনের অংশ বাঁশের ওপর ঝুলে থাকে। স্থানীয়দের সহায়তায় অক্ষত অবস্থায় বের হয়ে আসেন দুই পাইলট।

ভয় বাড়িয়েছে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

মাইলস্টোনে প্রশিক্ষণ বিমানের বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের খবর দেশবাসীর হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। মডেল ভিন্ন হলেও এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার ছায়া যেন বগুড়ার আকাশেও না নামে- এমনটাই প্রত্যাশা এখন স্থানীয়দের।

সাগর হোসেন, তারেক খন্দকার ও আব্দুল মালেকসহ এরুলিয়া বিমানবন্দরের আশেপাশের অন্তত ২০ জন বাসিন্দা জানান, একই জেলায় এক বছরে দুটি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুটিই প্রশিক্ষণ ফ্লাইট এবং উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যায় পড়ে। শেষরক্ষা হয় অবশ্য পাইলটদের দক্ষতায়।

‘দুর্ঘটনার এই ধারাবাহিকতা বড় ধরনের বিপদের সংকেত। বিমান বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণের মাঝে কীভাবে ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিচ্ছে?’- এমন প্রশ্নও তোলেন তারা।

তারা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ বিমান ভবিষ্যতের পাইলট তৈরির ক্ষেত্র। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ যদি জীবন-মরণের খেলা হয়ে ওঠে, তা অবশ্যই শঙ্কার বিষয়’।

স্থানীয়দের প্রত্যাশা, শুধু মেরামত বা তদন্তেই নয়, বিস্তৃত নিরাপত্তা ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপেই ফিরুক প্রশিক্ষণ বিমানে আস্থা।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button