
নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ায় ১০ দিন ধরে ৮ম শ্রেণির স্কুলছাত্রী নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীর নিখোঁজের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে স্কুলছাত্রী অপহরণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করেছে তারা। তবে মেয়েটির সন্ধান এখনও মিলেনি।
শিক্ষার্থীর সন্ধান না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তার স্বজনেরা। পরিবারের সদস্যদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব যেন তাদের মেয়েকে উদ্ধার করা হয়।
বগুড়া সদর থানায় করা অভিযোগ ও নিখোঁজের স্বজনদের কাছে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে বগুড়ার এডওয়ার্ড পৌর পার্ক থেকে ৮ম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে পরের দিন পার্কে যান স্বজনেরা। সেখানে আছমা আক্তার নামে এক নারী জানান তার সাথে ওই স্কুলছাত্রী মমইন ইকোপার্কে গিয়েছিল। এরপর আর কিছু জানেন না তিনি। সম্প্রতি পার্কে বেড়াতে এসে আছমার সাথে পরিচয় হয়েছিল এই স্কুলছাত্রীর। সেই সূত্র ধরে আছমা আক্তার নিখোঁজ হওয়া স্কুলছাত্রীর বাড়িতেও বেড়াতে গিয়েছিলেন।
ওই দিন (১৪ জুলাই) আছমা আক্তার স্কুলছাত্রীকে মমইন ইকোপার্কে নিয়ে যান। সেখানে কৌশলে কয়েকজন যুবকের হাতে তুলে দেন আছমা।
পরবর্তীতে ১৫ জুলাই পৌর পার্কে আছমার সঙ্গে দেখা হলে এসব বিষয় জানতে পারে নিখোঁজের স্বজনেরা। তার কথা মতো ইকোপার্কেও গিয়ে খোঁজ নেন। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় সদর থানায় অভিযোগ দেন নিখোঁজের বাবা।
অভিযোগের সূত্র ধরে স্কুলছাত্রীর অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই যুবকদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেয়ে আছমা আক্তারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২১ জুলাই ওই অভিযোগে অপহরণ মামলা রুজু করে গ্রেপ্তারদের আদালতে চালান করে পুলিশ। আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছে। সেই রিমান্ড চলমান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, বগুড়া সদরের হাজরাদিঘী এলাকার মো. পিয়াস (২৫), শরিফুল ইসলাম (২০), মো. সরণ হোসেন (২৮) ও বগুড়া সদরের ইসলামপুর হরিগাড়ীর আছমা আক্তার (১৯)।
মামলায় মেহেদী হাসান সিহাব ওরফে সোহেল (২৫) ও অজ্ঞাত আরও একজনকে আসামি করা হয়েছে। এরা পলাতক।
এর মধ্যে সরণ হোসেন ইকোপার্কের গেটম্যান ও সিহাব রফাতুল্লাহ মেডিকেল হাসপাতালের লিফটম্যানের চাকরি করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, আছমা আক্তারের দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুইজনকে হাজরাদিঘী ও সরণকে ইকোপার্কের গেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে কথাবার্তায় আছমা আক্তারের সাথে এদের যোগসাজশ থাকার বিষয় উঠে আসলে তাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয় স্বীকারও করেছেন।
নিখোঁজের বড় ভাই জানান, আমার বোনকে খুঁজতে পুলিশের সাথে আমিও গিয়েছিলাম। এখানে আরও দুজন পলাতক আছে। তাদের ধরলেই আমার বোনের সন্ধান মিলবে। কিন্তু আমরা শঙ্কিত যে আমার বোন এখন কি অবস্থায় আছে। দিন যাচ্ছে এই শঙ্কা বাড়ছে।
এসব বিষয়ে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, আমরা হাল ছাড়িনি। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় ৪ জন আমাদের কাছে গ্রেপ্তার আছে। তদন্তে জানতে পেরেছি একজনের কাছে মেয়েটি আছে, কিন্তু এখনই বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। তবে আশাবাদী খুব শীঘ্রই মেয়েটিকে উদ্ধার করা হবে।