
মাসুম হোসেন: রাত তখন পৌনে একটা। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের এক লেন-এ যান চলাচল বন্ধ। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি বাস। প্রাইভেটকার ও ট্রাকের মতো ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে প্রায় ৩০০ মিটার পেছনে গিয়ে সড়কের অন্য লেন দিয়ে ঘুরে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
কোনো দুর্ঘটনায় নয়, এ দৃশ্য ঘটে মহাসড়কের পাশে অবস্থিত তাজ হাইওয়ে হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট-এ যাত্রা বিরতির সময়। আর এটি হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো চিত্রও নয়; নয়মাইল এলাকায় এমন পরিস্থিতি চলছে মাস চারেক ধরে নিয়মিতভাবে। বিশেষ করে মধ্যরাতে মহাসড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও ভোগান্তি।
গত সোমবার (২৮ জুলাই) মধ্যরাতে হোটেলটির সামনে দেখা যায় অন্তত ২০ থেকে ২৫টি বাস দাঁড়িয়ে আছে, যার মধ্যে ৪-৫টি বাস পুরো মহাসড়ক (এক লেন) দখল করে দাঁড় করানো আছে। ফলে পুরো রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাজ হাইওয়ে হোটেলের সামনে মহাসড়ক দখল করে বাস পার্কিং করাটা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়মিত যাত্রী ও চালকেরা বিষয়টি জানার কারণে বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে নেন। কিন্তু যারা জানেন না, তারা অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তিতে পড়েন।
এ বিষয়ে জানতে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের একটি মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার দবির নাম বলা এক ব্যক্তি ফোনে জানান, তিনি হোটেলের একজন কর্মচারী। হোটেলের মালিক তাজুল ইসলাম বেলাল তখন উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি দাবি করেন, মহাসড়কে কোনো বাস পার্কিং করা হয় না। গত রাতে এ রকম কিছু হয়েছিল কিনা, সে বিষয়েও তিনি অবগত নন কারণ ওই সময় তিনি ডিউটিতে ছিলেন না।
এ প্রসঙ্গে বগুড়ার শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) আজিজুল হক জানান, তাজ হাইওয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে মহাসড়কে বাস পার্কিং না করাতে একাধিকবার বলা হয়েছে। এ ছাড়া সেখানে কয়েকবার অভিযানও চালানো হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও অভিযান চালানো হবে। মহাসড়কে কোনোভাবেই পার্কিং করার সুযোগ নেই।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, নিয়মিত অভিযান ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাতের পর রাত মহাসড়ক দখল করে এমন দুর্ভোগ চলছেই। এই চিত্র বদলাবে কবে?