আন্তর্জাতিক খবর

দুধের বদলে পানি পান করে বেঁচে থাকার চেষ্টা গাজার শিশুদের

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের মাসব্যাপী অবরোধে ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়েছে স্থানীয় জনগণ। এই সংকটের সবচেয়ে করুণ চিত্র দেখা যাচ্ছে শিশুদের মধ্যে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজায় বাস্তবিক অর্থেই এখন দুর্ভিক্ষ চলছে এবং তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছে ৮৮ জনের বেশি শিশু। শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, দুধ ও ওষুধ একেবারেই শেষ। পরিবারগুলো দিনে এক বেলা খাবার পেলেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছে।

আলজাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি দেইর আল-বালাহ থেকে ভিডিও প্রতিবেদনে জানান, গাজার মায়েরা চরম অসহায়তায় দিন কাটাচ্ছেন। তারা সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে কেবল তাদের বেঁচে থাকার প্রার্থনা করছেন।

গাজার বাসিন্দা লিনা তার ৯ মাসের শিশু ওমরের কথা জানিয়ে বলেন, “সে অপুষ্টিতে ভুগছে, হাঁপানিও হয়েছে। ছয় সপ্তাহে এক ফোঁটা দুধও জোটেনি। এখন শুধু পানি দিয়েই তাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।”

লিনা আরও বলেন, “একজন মা হয়ে সন্তানের কান্না শুনেও যখন কিছু দিতে পারি না, তখন নিজেকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ মনে হয়।”

খান ইউনিসের আরেক মা জুডও একইরকম সংকটে পড়েছেন। তার জমজ দুই শিশু টোফি ও না কখনোই মাতৃদুগ্ধ পায়নি। কারণ অপুষ্টির কারণে জুডের শরীরে দুধই উৎপাদন হচ্ছে না। তারা প্রতিদিন শুধু মসুর ডাল আর পানি খাচ্ছে। দুধ কিংবা পুষ্টিকর খাবার কিছুই জোটে না।

গাজার বাজারে ফর্মুলা দুধ কখনো পাওয়া গেলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ বা দামি হওয়ায় সাধারণ মানুষ কিনতে পারে না।

গাজার প্রতিটি মা এখন একটিই প্রার্থনা করছেন— যেন আগামীকাল তাদের সন্তান অন্তত জীবিত থাকে। তাদের একমাত্র ভরসা, হয়তো কোনো একদিন সাহায্য এসে পৌঁছাবে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button