জাতীয়
প্রধান খবর

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস


২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানমঞ্চে তিনি এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

সরকারি সূত্র জানায়, এই ঘোষণাপত্রটি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মারক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হয়। ইতোমধ্যে এর রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যও গড়ে উঠেছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয় এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে।

তিনি বলেন, ১/১১-এর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং পরবর্তী ষোল বছরের দুঃশাসন, দমন-পীড়ন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর culmination ঘটে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে, যেখানে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে একটি সর্বাত্মক জনজাগরণ সৃষ্টি হয়।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ ফ্যাসিবাদবিরোধী আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে এবং ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবে রূপ নেয়। পরবর্তীতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। একইসঙ্গে ফ্যাসিস্ট শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, আন্দোলনের শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণা এবং একটি নতুন সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার অভিপ্রায় প্রকাশ করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, এই ঘোষণাপত্র শুধু একটি দলিল নয়; এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে এই ঘোষণাপত্রকে সংস্কারকৃত সংবিধানে সন্নিবেশ করার প্রক্রিয়াও ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, “এই দলিল বিজয়ী জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমরা সবাই মিলে একটি ন্যায়ভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক এবং পরিবেশ-সহিষ্ণু রাষ্ট্র গঠনের পথে এগিয়ে যাব।”

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button