ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আজ এক বছর পূর্ণ হলো।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং তিনি ভারতে পালিয়ে যান। এর আগে ৩৬ দিনের আন্দোলনে বহু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হতাহত হন। ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকে নির্বাচনী ব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও অভ্যুত্থানে নিহতদের বিচারসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে এবং জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর ‘জুলাই সনদ’-এর খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ঘোষণা দেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, রমজানের আগে অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়। নির্বাচন কমিশন জানায়, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
সরকার ইতিমধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার ও নারীবিষয়ক নয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পেয়েছে এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
অর্থনীতিতে ইতিবাচক অগ্রগতির মধ্যে রয়েছে—২০২৫ সালের জুনে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮ শতাংশে নামা, যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। প্রবাসীদের আস্থায় গত অর্থবছরে রেকর্ড ৩০৩৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, রপ্তানি আয় ৯ শতাংশ বেড়েছে এবং টাকার মান ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে। গত ১১ মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরও রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, বন্যা ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সত্ত্বেও বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে, বিশেষ করে গত রমজান থেকে। সরকারের লক্ষ্য সব খাতে সংস্কার ও স্থিতিশীলতা ধরে রেখে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজন।
