
নিজস্ব প্রতিবেদক: বগুড়ার শাজাহানপুরে বাসের চাকা পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অটোরিকশাকে চাপা দিলে অন্তত ৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেতগাড়ী দ্বিতীয় বাইপাস এলাকাযর ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন শাজাহানপুরের জুসখোলা গ্রামের মো. শাকিল (২৮), নিমগাছি ফকিরপাড়ার মোছা. রেশমী (৩২), মোছা. দোলেনা (৫০), মোছা. সালমা (৪৮), খোট্টাপাড়ার মো. মোকছেদুল (৫০) এবং অজ্ঞাত এক ব্যক্তি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে বগুড়াগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সামনের চাকা হঠাৎ পাংচার হয়ে যায়। এতে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং রিকশার যাত্রীরা গুরুতর আহত হন।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন এবং আহতদের উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে নিউরো সার্জারি, সার্জারি ও অর্থো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করার পরামর্শ দেন।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে দুর্ঘটনার প্রতিরোধের দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ করেন। এই সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের দু পাশের কয়েকশ গাড়ি আটকা পড়ে। পরবর্তীতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সম্মিলিত চেষ্টায় প্রায় তিন ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তারা জানান, বেতগাড়ী বাইপাস মোড়ে কিছুদিন পর পর দুর্ঘটনা ঘটে। এখানে সবসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের জানমালের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এ জন্য এমন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে তারা ফ্লাইওভার ব্রিজ নির্মাণ ও মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবি জানান।
শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, আজ বেলা ১২ টা ৪০ মিনিটে এম আর পরিবহনের একটি বাসের চাকা বিস্ফোরণ হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনটি অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে ছয় জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করেন। পরে স্থানীয়দের সাথে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা হয়। এই দাবিগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের প্রসঙ্গে শেরপুর হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে গাড়ি চলাচলের জন্য ছয় লেন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি লেন ছোট যান চলাচলের জন্য সার্ভিস রোড হিসেবে ব্যবহার হয়। মূল লেনে কখনওই তিন চাকার অটোরিকশা চলাচলের নিয়ম নেই। কিন্তু অনেক সময় অটোরিকশাগুলো মূল লেনে ঢোকার চেষ্টা করে।
হাইওয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা এ জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাই এসব বন্ধ করার। তবে এসব ক্ষেত্রে গাড়িচালকসহ প্রত্যেকের সচেতন হলে এই অনিয়মগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।