
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এর পরবর্তী সরকারে তিনি কোনো পদে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজ-এ লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেন, “আমি শুরু থেকেই স্পষ্ট করেছি—জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতেই হবে। এই নির্বাচনের পরবর্তী সরকারে আমি কোনো পদে থাকব না, নির্বাচিত বা নিযুক্ত—কোনো ভূমিকাতেই নয়। আমাদের সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা।”
ড. ইউনূস নিবন্ধে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যাত্রা শুধু দেশের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হয়ে উঠছে। তিনি জানান, স্বৈরশাসন অবসানের পর অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচন আয়োজন এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে সরকার বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের সরকার ও তাদের সহযোগীরা গত ১৫ বছরে প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। এ অর্থ ফেরত আনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্ভাবনা রক্ষার নৈতিক দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নিবন্ধে ড. ইউনূস আরও লিখেছেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেঙে পড়া অবস্থা তাঁকে স্তম্ভিত করেছিল। তবে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং তরুণ প্রজন্মের সহযোগিতায় দেশ পুনর্গঠনের পথে এগোচ্ছে। ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের দমন না করে সেনাবাহিনীর ধৈর্যশীল ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
একই সঙ্গে তিনি বিদেশনীতি পুনর্গঠন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, সংবিধান সংস্কার উদ্যোগ এবং একটি বড় সংস্কার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। তার মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে।
তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. ইউনূস বলেন, জেনারেশন জেডসহ নতুন প্রজন্মগুলো একসাথে মিলে এমন এক পৃথিবী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে যেখানে থাকবে ‘তিন শূন্য’—শূন্য বেকারত্ব, শূন্য দারিদ্র্য ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ।
তিনি বিশ্বাস করেন, কোটি মানুষের সংকল্প, কল্পনা ও সাহসই বাংলাদেশকে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও আশার আলোর দেশে পরিণত করতে পারে।