তথ্য ও প্রযুক্তি

গ্রোক চ্যাটবট থেকে কয়েক লাখ কথোপকথনের তথ্য অনলাইনে ফাঁস

তাৎক্ষণিক অনলাইন তথ্য অনুসন্ধান ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্লেষণের ক্ষমতার কারণে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান এক্সএআইয়ের তৈরি গ্রোক চ্যাটবট। নিয়মিত এই চ্যাটবট ব্যবহার করছেন অনেকেই।

তবে সম্প্রতি হঠাৎ করেই গ্রোকের ব্যবহারকারীদের কয়েক লাখ কথোপকথনের তথ্য অনলাইনে ফাঁস হয়ে গেছে। গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে এসব তথ্য সহজেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট ‘গ্রোক’-এ চ্যাট শেয়ার করার জন্য রয়েছে একটি নির্দিষ্ট বাটন। এই বাটনে ক্লিক করলে নির্দিষ্ট কারও সঙ্গে বার্তা বিনিময়ের জন্য একটি লিংক তৈরি হয়। কিন্তু সেই লিংক শুধু প্রাপক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না থেকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হয়ে প্রকাশ্যে চলে গেছে।

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সার্চ ইঞ্জিনে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার গ্রোক কথোপকথন পাওয়া গেছে, যেগুলো ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য অন্তর্ভুক্ত করেছে।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, এ ঘটনাটি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য ‘একটি বড় ধরনের বিপর্যয়’। অনলাইনে ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে নিরাপদ পাসওয়ার্ড তৈরির পরামর্শ, ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট, এবং জটিল চিকিৎসাবিষয়ক প্রশ্নোত্তরসহ আরও নানা ধরনের ব্যক্তিগত আলোচনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ার করা চ্যাটে ব্যবহারকারীর নাম বা অ্যাকাউন্ট সরাসরি দৃশ্যমান না হলেও সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়ে যেতে পারে। এতে গোপনীয়তার ঝুঁকি বাড়ছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক লুক রোশার বলেন, ‘ফাঁস হওয়া চ্যাটে ব্যবহারকারীর নাম, অবস্থান, মানসিক স্বাস্থ্য, ব্যবসার তথ্য বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাও উঠে আসছে। একবার অনলাইনে চলে আসায় এসব তথ্য চিরদিন সেখানেই থেকে যাবে।’

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর এথিকস ইন এআইয়ের সহযোগী অধ্যাপক ক্যারিসা ভেলিজ বলেন, ‘ব্যবহারকারীদের না জানিয়ে তাদের চ্যাট সার্চে প্রকাশ হওয়া উদ্বেগজনক। প্রযুক্তি আমাদের জানায় না, আমাদের তথ্য দিয়ে কী করা হচ্ছে। আর সেটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।’

গ্রোক চ্যাটবটের মতো তথ্য ফাঁসের ঘটনা চ্যাটজিপিটির ক্ষেত্রেও ঘটেছে। সমস্যা সমাধানে চ্যাটজিপিটির একটি পরীক্ষামূলক সুবিধা এরই মধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, চ্যাটজিপিটির শেয়ারেবল চ্যাটকে গুগলে খুঁজে পাওয়ার অপশনটি ছিল একটি স্বল্পমেয়াদি পরীক্ষা। ব্যবহারকারীদের তথ্য অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশের ঝুঁকি থাকায় অপশনটি এরই মধ্যে মুছে ফেলা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button