খতনা করানোর উপযুক্ত বয়স কত?

বাংলাদেশসহ মুসলিমপ্রধান দেশগুলোতে খতনা একটি ধর্মীয় ও সামাজিক প্রথা। তবে খতনা করানোর উপযুক্ত বয়স নিয়ে অনেক পরিবারেই দ্বিধা থেকে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, স্বাস্থ্যগত দিক থেকে জন্মের পর প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই খতনা করানো সবচেয়ে নিরাপদ ও উপযোগী।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, “শিশু জন্মের পর ছয় মাস বয়সের মধ্যেই খতনা করানো উত্তম। এ বয়সে শিশুর টিস্যু নরম থাকে, ফলে রক্তক্ষরণ ও সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া সেরে ওঠার সময়ও খুব কম লাগে।”
চিকিৎসকদের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত ৫ থেকে ১০ বছর বয়সে খতনা করানো হয়। তবে বয়স যত বাড়ে, খতনার সময় ব্যথা, রক্তক্ষরণ এবং মানসিক চাপ তত বেশি হয়। কিশোর বয়সে খতনা করালে সেরে উঠতে সময় দীর্ঘ হয় এবং জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কখন ঝুঁকি বেশি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১২ বছর বা তার বেশি বয়সে খতনা করানো তুলনামূলকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। এ বয়সে টিস্যু শক্ত হয়ে যায়, ফলে অস্ত্রোপচারের সময় রক্তক্ষরণ বেশি হয় এবং ক্ষত শুকাতে সময় লাগে। অনেক সময় মানসিক ভীতিও থেকে যায়।
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
খতনা করানোর ফলে মূত্রনালীর সংক্রমণ, যৌনাঙ্গের বিভিন্ন সংক্রমণ এবং দীর্ঘমেয়াদে জটিল কিছু রোগের ঝুঁকি কমে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গবেষণায়ও প্রমাণিত হয়েছে, খতনা পুরুষদের জন্য প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভূমিকা রাখে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
চিকিৎসকরা বলছেন, খতনার সবচেয়ে নিরাপদ সময় হলো জন্মের পর প্রথম এক বছর। যদি এ সময়ে সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত স্কুলে ভর্তির আগেই খতনা করানো উচিত। তবে যেকোনো বয়সে খতনা করাতে হলে অভিভাবকদের দক্ষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং নিরাপদ পরিবেশে অস্ত্রোপচার নিশ্চিত করতে হবে।