অর্থ ও বানিজ্য

দেশে প্রতি ৪ পরিবারের মধ্যে ৩ পরিবারই স্মার্টফোন ব্যবহার করে

দেশে স্মার্টফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার দ্রুত বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে স্মার্টফোনের ব্যবহার। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি চারটি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবারেই এখন অন্তত একটি স্মার্টফোন রয়েছে।

গত সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) প্রকাশিত ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে। গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, দামি স্মার্টফোনের পাশাপাশি এখন কম দামের সেটও বাজারে পাওয়া যায়। ফলে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষও সহজে স্মার্টফোন কিনে ব্যবহার করতে পারছেন।

৭৪ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন

পিপিআরসির জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের প্রায় ৭৪ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি স্মার্টফোন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যও এর কাছাকাছি—বর্তমানে ৭৪ দশমিক ১ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন আছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

গ্রাম ও শহরের ব্যবহারে পার্থক্য রয়েছে। শহরের ৮০ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন থাকলেও গ্রামে এ হার ৭১ শতাংশ। তবে ফিচার ফোন গ্রামে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে—গ্রামের ৭৯ শতাংশ পরিবারে ফিচার ফোন রয়েছে, শহরে তা ৭২ শতাংশ।

জরিপে আরও দেখা গেছে, তরুণদের উপস্থিতি বেশি এমন পরিবারে স্মার্টফোন ব্যবহারও তুলনামূলক বেশি। দেশে বর্তমানে ৬৪ শতাংশ পরিবারে কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, যার ৮০ শতাংশই মোবাইল নেটওয়ার্কনির্ভর। ব্যক্তিগত হিসাবে দেশের প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।

ল্যাপটপ ব্যবহারে পিছিয়ে

স্মার্টফোনের ব্যবহার দ্রুত বাড়লেও ল্যাপটপের ব্যবহার এখনো সীমিত। জরিপ অনুযায়ী, মাত্র ৫ শতাংশ পরিবারের কাছে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার রয়েছে। শহরে প্রতি ১০ পরিবারের একটি এবং গ্রামে প্রতি ৪০ পরিবারের একটি পরিবারে এ যন্ত্র পাওয়া যায়। গবেষণায় বলা হয়েছে, আয়বৈষম্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে বড় প্রভাব ফেলছে।

ব্যবহারের ক্ষেত্র

স্মার্টফোনের প্রধান ব্যবহার যোগাযোগের জন্য হলেও পড়াশোনা, বিনোদন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, আর্থিক লেনদেন, চাকরি ও ব্যবসার প্রয়োজনে এর ব্যবহার বাড়ছে। অর্ধেকের বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার হয় মোবাইল আর্থিক সেবায়। প্রায় ৮০ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত থাকেন।

শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস, গবেষণা, ই-বুকসহ নানা শিক্ষামূলক কাজে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহার করছেন। জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষামূলক কাজে ৫০ শতাংশ ল্যাপটপ ও ২০ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন ব্যবসা ও সরকারি ভাতা গ্রহণে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও ফিচার ফোনের ব্যবহার বাড়ছে।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button