তথ্য ও প্রযুক্তি

৫জি আপনাকে কী কী সুবিধা দেবে?

প্রতীকী ছবি/ফ্রিপিক

দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল অপারেটর রবি ও গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ৫-জি সেবা চালু করেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দেশে শুরু হলো ৫-জি যুগের যাত্রা, যা ডিজিটাল যোগাযোগ খাতে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রথম ধাপে নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে সেবা চালু হলেও পর্যায়ক্রমে সারাদেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫-জি শুধু দ্রুতগতির ইন্টারনেট নয়, বরং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, শিল্প উৎপাদন এবং স্মার্ট সিটি উন্নয়নে বড় পরিবর্তন আনবে।

৫-জি কী

মোবাইল যোগাযোগ প্রযুক্তির পঞ্চম ধাপ হলো ৫-জি বা ‘ফিফথ জেনারেশন’। এটি ৪-জি এলটিইর পরবর্তী সংস্করণ, যা তৈরি করা হয়েছে দ্রুতগতির ডেটা আদান-প্রদান, অত্যন্ত কম লেটেন্সি এবং একই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক ডিভাইস সংযুক্ত রাখার ক্ষমতা নিয়ে। এই প্রযুক্তি শুধু ফোনকল বা ইন্টারনেট ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং স্মার্ট সিটি, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, রিমোট সার্জারি, আইওটি, ভিআর ও এআর সহ নানান ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম।

বিকাশের ধাপ

১-জি: ১৯৮০-এর দশকে চালু হয়, কেবল ভয়েস কলের জন্য ব্যবহৃত।

২-জি: ডিজিটাল সিগন্যাল চালুর ফলে এসএমএস ও উন্নত ভয়েস কোয়ালিটি পাওয়া যায়।

৩-জি: মোবাইল ইন্টারনেট, ওয়েব ব্রাউজিং ও ভিডিও কলের সুযোগ তৈরি করে।

৪-জি: স্মার্টফোনের মূলভিত্তি, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও এইচডি ভিডিও স্ট্রিমিং সম্ভব করে।

৫-জি: ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে গবেষণা শুরু এবং ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যিক সেবা চালু হয়।

কাজের পদ্ধতি

সাব-৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ড: দূরবর্তী কভারেজে উপযোগী, তবে গতি তুলনামূলক কম।

মিলিমিটার ওয়েভ: ২৪–৩০০ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে অতিদ্রুত ডেটা ট্রান্সফার।

ম্যাসিভ এমআইএমও: একাধিক অ্যান্টেনা দিয়ে একইসঙ্গে বহু ডিভাইসে ডেটা প্রেরণ।

ডেনসিফিকেশন: ছোট ছোট সেল টাওয়ার বসিয়ে কভারেজ ও গতি বৃদ্ধি।

নেটওয়ার্ক স্লাইসিং: নেটওয়ার্ককে বিভিন্ন ভার্চুয়াল ভাগে বিভক্ত করে নির্দিষ্ট প্রয়োজনে ব্যবহার।

গতি ও কর্মক্ষমতা

ডাউনলোড স্পিড: সর্বোচ্চ ২০ জিবিপিএস (৪-জির তুলনায় ১০–২০ গুণ বেশি)

আপলোড স্পিড: সর্বোচ্চ ১০ জিবিপিএস (৪-জির ১০০ এমবিপিএসের তুলনায় অনেক বেশি)

লেটেন্সি: মাত্র ১ মিলিসেকেন্ডের নিচে

প্রধান সুবিধা

সুপার ফাস্ট ইন্টারনেট: কয়েক সেকেন্ডে ৪কে/৮কে ভিডিও ডাউনলোড, ল্যাগ-মুক্ত গেমিং ও স্ট্রিমিং।

উচ্চ সংযোগ ঘনত্ব: প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০ লাখ ডিভাইস একসঙ্গে সংযুক্ত।

স্মার্ট সিটি ও ইন্ডাস্ট্রি ৪.০: ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রগতি।

শিল্প উৎপাদন: রোবট ও মেশিন রিয়েল-টাইমে নিয়ন্ত্রণ।

গেমিং ও বিনোদন: ক্লাউড গেমিং, ভিআর-এআর অ্যাপস এবং উচ্চমানের ভিডিও কনফারেন্সিং আরও সহজ ও দ্রুত।

এই বিভাগের অন্য খবর

Back to top button