
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন, যাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে—তারা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৫) ও কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)। বাকি দুইজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিষয়টি গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে এনসিপির আয়োজিত সমাবেশ শেষে পদযাত্রার সময়। অভিযোগ উঠেছে, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশে হামলা চালায়। তারা হঠাৎ মিছিল নিয়ে এসে মঞ্চে চড়াও হয়ে সাউন্ড সিস্টেম ও চেয়ার ভাঙচুর করে এবং এনসিপি নেতাকর্মীদের মারধর করে। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
পরে ঘটনাস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
হামলার পর এনসিপির নেতারা নিরাপত্তার জন্য গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। তারা জানান, গাড়িবহরের একটি অংশ মাদারীপুরের উদ্দেশে যাত্রা করলেও, হামলার আশঙ্কায় অন্য অংশটি আটকা পড়ে। ফলে তারা পুলিশের সহায়তা চেয়ে আশ্রয় নেন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সহিংসতা ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জ পৌরপার্কে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল।